ঘরহারা ৬০ পরিবার

দলবল নিয়ে চোখের সামনে গুঁড়িয়ে দিলো আশ্রয়ণ কেন্দ্র

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পাবনা
প্রকাশিত: ০৯:২১ পিএম, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

পাবনায় অস্ত্রের মুখে আশ্রয়ণ কেন্দ্র দখলে নিয়েছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। এসময় এ প্রকল্পের সব ঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। লুটপাট করা হয় ঘরে থাকা আসবাবপত্র ও মালামাল। এ ঘটনায় ঘরহারা হয়েছেন ৬০টি পরিবার। মাথা গোঁজার শেষ ঠাঁইটুকু হারিয়ে দিশেহারা এসব পরিবার।

স্থানীয় ও আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দারা জানান, পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের পশ্চিম জামুয়া এলাকার খাসজমিতে গৃহ ও ভূমিহীন ৬০টি পরিবারকে ঘর করে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আশ্রয়ণ কেন্দ্রের জায়গা নিজেদের দাবি করে ৮ আগস্ট রাতে অস্ত্রের মুখে মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বাসিন্দাদের ঘর ছাড়তে বাধ্য করে স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, এ আশ্রয়ণ কেন্দ্রের একটি ঘরও অক্ষত নেই। সবগুলো ঘরই ভাঙচুর করা হয়েছে। খুলে নেওয়া হয়েছে টিনের চাল, লোহার দরজা ও জানালসহ অন্যান্য সরঞ্জাম। তবে সম্প্রতি লাগানো একটি সাইনবোর্ড দেখা যায় আশ্রয়ণ কেন্দ্রে। সাইনবোর্ডে এই জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান বলে উল্লেখ করা হয়।

দলবল নিয়ে চোখের সামনে গুড়িয়ে দিলো আশ্রয়ণ কেন্দ্র

এতে বাদী হিসেবে স্থানীয় আকরাম প্রাং, উম্বার প্রাং, ইব্রাহিম, আক্কাস, ইসমাইল, নবাব ও নায়েব আলী প্রামাণিকের নাম লেখা রয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, ভুক্তভোগীদের চোখের সামনেই আশ্রয়ণ কেন্দ্রকে ভাঙচুর করে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। ঘর ছাড়া করা হয়েছে অর্ধশতাধিক পরিবারকে। তারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা ফাতেমা খাতুন বলেন, অস্ত্র নিয়ে আচমকা আশ্রয়ণ কেন্দ্রে হামলা করে। গালিগালাজ ও মারধর করে অস্ত্রের মুখে ঘর ছাড়তে বাধ্য করে। এরপর ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু করে। আমরা একেবারে শেষ হয়ে গেছি।

ভুক্তভোগী ফুলমালা বেগমসহ আরও কয়েক বাসিন্দা বলেন, হঠাৎ করে দলবল নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে আমাদের বের করে দেয়। ‘এ জায়গা কারোর বাপের না, এ জায়গা তাদের’- বলে ঘর থেকে বের হতে গালাগালি করতে থাকে।

দলবল নিয়ে চোখের সামনে গুড়িয়ে দিলো আশ্রয়ণ কেন্দ্র

তারা বলেন, আমরা অসহায় দরিদ্র মানুষ। তাদের সামনে প্রতিবাদ করার ক্ষমতা নেই। ব্যাপারটা সবাই জানলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।

এ বিষয়ে ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খান বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকেই ঘর ছাড়তে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছিল। তখনই বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে পদক্ষেপ নেবে বলে জানায়। কিন্তু তেমন কিছুই নেওয়া হয়নি।

এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক মফিজুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য যা যা করণীয় সব কিছুই করা হবে। কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তার হিসাব করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আলমগীর হোসাইন/জেডএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।