ব্যাংকে উদ্বৃত্ত তারল্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৫ এএম, ২৩ জুলাই ২০২৫

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট নিয়ে নানা আলোচনার জন্ম হলেও জুন শেষে চিত্র ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জুন পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট তারল্যের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ লাখ ৭০ হাজার ৬১১ কোটি টাকা। আর ন্যূনতম প্রয়োজনীয় তারল্য ছিল ৩ লাখ ৪ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা। এর মানে, ব্যাংক খাতে নিট উদ্বৃত্ত রয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় তারল্য বেড়েছে প্রায় ৯৭ হাজার কোটি টাকা।

সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের চিত্র

সরকারি ব্যাংকগুলোর উদ্বৃত্ত তারল্য ৮৮ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকের উদ্বৃত্ত ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংকগুলোর উদ্বৃত্ত ৩৩ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। তবে ইসলামী ব্যাংকগুলোতে ঘাটতি রয়েছে ৪৩৩ কোটি টাকা। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতেও রয়েছে ৬২ কোটি টাকার ঘাটতি।

রেকর্ড রেমিট্যান্স ও রিজার্ভ

২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে রেকর্ড ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার। শুধু জুন মাসেই এসেছে ২ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। রিজার্ভও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৬ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্লেষকদের মতামত

ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি আরফান আলী বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বিনিয়োগ কমেছে। উচ্চ সুদের কারণে ব্যবসায়ীরা ঋণ নিতে দ্বিধায় ছিলেন। এতে ব্যাংকে তারল্য বেড়েছে।

অর্থনীতিবিদ ও চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ রিসার্চ ফেলো এম হেলাল আহমেদ জনি বলেন, রেকর্ড রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক ঋণ প্রবাহে রিজার্ভ বেড়েছে। হুন্ডি কমে যাওয়ায় ডলার চাপও কমেছে। সবমিলিয়ে এটি অর্থনীতির জন্য ভালো বার্তা।

ডলার ও সরকারের ঋণ চিত্র

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে তারা ৫০৩ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। জুনে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দর ছিল ১২২ টাকা ৭৭ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১১৮ টাকা।

এছাড়া, সঞ্চয়পত্রে মে পর্যন্ত বিক্রয়ের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। সরকার এই সময়কালে নিট ঋণ নিয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা, আগের বছরের তুলনায় তা বেড়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মন্তব্য

ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, পালাবদলের পর অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। তারল্য বেড়েছে, রিজার্ভ বেড়েছে, ডলারের বাজার স্থিতিশীল হয়েছে। এসবই ভবিষ্যতের জন্য আশাব্যঞ্জক সংকেত।

ইএআর/এসএনআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।