অটোমোবাইল শিল্পে সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান বারভিডার
দেশের সার্বিক গাড়ি আমদানি বাণিজ্য এবং অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালার আলোকে সরকারকে একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)।
বারভিডার বার্ষিক সাধারণ সভায় সংগঠনের নেতারা এ আহ্বান জানান বলে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। সভায় সংগঠনের প্রায় সাড়ে পাঁচ শ সদস্য অংশ নেন। বারভিডা প্রেসিডেন্ট আবদুল হকের সভাপতিত্বে এতে সেক্রেটারি জেনারেল রিয়াজ রহমানসহ ভাইস প্রেসিডেন্ট, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও কার্যনির্বাহী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বারভিডার নেতারা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি বাণিজ্যে স্থানীয় বিনিয়োগ, ব্যাপক কর্মসংস্থান, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে বিনিয়োগ এবং সরকারকে দেওয়া রাজস্ব কাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি খাতের অবদান তুলে ধরেন।
বারভিডা প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা গত চার দশক ধরে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মানসম্পন্ন যানবাহন সরবরাহ করে দেশের পরিবহন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। বারভিডার আমদানি করা গাড়িগুলো জাপানের অভ্যন্তরীণ মডেলের, যা দেশের সিংহভাগ জনগোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানের চাহিদা ও প্রয়োজন মিটিয়ে মানসম্পন্ন সেবা দিতে সক্ষম হচ্ছে। রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ব্যবসা একটি ‘সোশ্যাল বিজনেস’, শুধু মুনাফাকারী ব্যবসা নয়।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসন কর্তৃক বিভিন্ন দেশের পণ্য রপ্তানিতে পাল্টা শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্ব বাণিজ্যের হিসাব-নিকাশ বদলে গেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশকে নতুন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে। বিনিয়োগ-শিল্প স্থানান্তরিত হচ্ছে। বিশ্ব বাণিজ্যে চীনের প্রভাব বলয় এবং দেশটির বিভিন্নমুখী উৎপাদন ক্ষমতা লক্ষণীয়ভাবে বিস্তৃত হওয়ায় ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে জাতীয় স্বার্থ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সতর্কতার সাথে ভূকৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
আবদুল হক বলেন, বিভিন্নধর্মী গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মোটরগাড়ি নির্মাণ এবং বিপণন শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছে। বিশ্বে মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ ইত্যাদি নামকরা গাড়ির বিক্রি কমে যাচ্ছে। ক্রেতাদের সামর্থ্য, পছন্দ ও চাহিদা পরিবর্তিত হচ্ছে। আবার বিশ্বজুড়ে পরিবেশ সচেতনতার প্রেক্ষাপটে জ্বালানি সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ফসিল ফুয়েল ও হাইব্রিড গাড়ি থেকে ক্রমান্বয়ে বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহারের পথে অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারও দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্প প্রসারে ‘ইলেকট্রিক ভেহিকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০২৫’ প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পে তুলনামূলক অনেক কম শুল্ক-কর ধার্য করায় বারভিডা আমদানি করা হাইব্রিড গাড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পড়তে হবে। এ অবস্থায় রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি বাণিজ্যে স্থানীয় বিনিয়োগ, ব্যাপক কর্মসংস্থান, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পগুলোতে বিনিয়োগ এবং সরকারের রাজস্ব কাঠামোয় রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি খাতের সার্বিক অবদানের পরিপ্রেক্ষিতে ভারসাম্য রক্ষা করে দেশের অটোমোবাইল শিল্পের জন্য সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
এমএএস/একিউএফ