বিনিয়োগকারীদের পছন্দের শীর্ষে লোকসানি আইএসএন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:২৪ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০২৫

গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে লোকসানে নিমজ্জিত ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক লিমিটেড (আইএসএন)। কোম্পানিটির শেয়ার এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের পছন্দের শীর্ষে চলে আসায় সপ্তাহের পাঁচ দিনই দাম বেড়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে এই কোম্পানি।

শেয়ারের দাম বাড়লেও কোম্পানিটি লোকসানে নিমজ্জিত। এমনকি শেয়ারের দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জও। আর এই অস্বাভাবিক দাম বাড়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ (বিএসইসি) থেকে ডিএসইকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো কিছুই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা রুখতে পারেনি।

গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৪৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩৩ টাকা ১০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সম্মিলিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৩৬ কোটি ১৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ১০৫ টাকা ৭০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ছিল ৭২ টাকা ৬০ পয়সা।

কোম্পানিটির শেয়ারের এই দাম বাড়ার প্রবণতা চলছে গত ৩০ এপ্রিলের পর থেকেই। গত ৩০ এপ্রিল কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৩৩ টাকা ৭০ পয়সা। অর্থাৎ সাড়ে তিন মাসের ব্যবধানে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৭২ টাকা বা ২১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

অন্যভাবে বলা যায়, যদি কোনো বিনিয়োগকারী গত ৩০ এপ্রিল ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্কের ১০ লাখ টাকার শেয়ার কেনেন তাহলে এখন তার বাজার মূল্য ৩১ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৮ টাকা। এ হিসাবে ১০ লাখ টাকা খাটিয়ে সাড়ে তিন মাসেই মুনাফা পাওয়া গেছে ২১ লাখ ৩৬ হাজার টাকার বেশি।

শেয়ার দাম এমনভাবে বাড়া কোম্পানিটির সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২৪ সালের জুন থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসের ব্যবসায় লোকসান হয়েছে ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৪ টাকা। এতে শেয়ার প্রতি ১৭ পয়সা লোকসান হয়েছ।

এদিকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। তার আগে ২০২৩ সালে ১ শতাংশ, ২০২২ সালে ৩ শতাংশ, ২০২০ সালে ১ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। অর্থাৎ কোম্পানিটির লভ্যাংশের হার খুব একটা ভালো না।

২০০২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন মাত্র ১০ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আর শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার ৩টি। এর মধ্যে ২১ দশমিক ৪৭ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ শেয়ার আছে।

ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্কের পরই গত সপ্তাহে দাম বাড়ার তালিকায় ছিল ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৩২ দশমিক ৭০ শতাংশ। ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন।

এছাড়া গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, মুন্নু ফেব্রিক্সের ২৩ দশমিক ৯০ শতাংশ, সোনালী পেপারের ২২ দশমিক ৩৬ শতাংশ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ২১ দশমিক ১০ শতাংশ, সিনো বাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের ১৮ দশমিক ৮১ শতাংশ, শাহজিবাজার পাওয়ারের ১৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং জাহিন টেক্সটাইলের ১৮ শতাংশ দাম বেড়েছে।

এমএএস/এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।