লুটপাট হলে দায় ওই ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নিতে হবে: গভর্নর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫১ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

কোনো ব্যাংকে লুটপাট হলে তার দায় ওই ব্যাংকের সব কর্মকর্তাকে নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা ব্যাংক কর্মকর্তার দায়িত্ব নিচের লেভেলের হলেও ব্যাংকের ক্ষতি হয় এমন কাজ হলে কর্তৃপক্ষকে জানানো ও তাদের নজরে আনা। সেটা যদি তারা না করে তারাও পানিশমেন্টের আওতায় আসবেন। শাস্তির ভাগটা নিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ব্যাংকিং সেক্টর রিফর্ম: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ওপরের লেভেলে খারাপ হতেই হবে। কিন্তু নিচের লেভেলেও খারাপ আছে। আমি এখানে কালেক্টিভ পানিশমেন্টের দিকেই যাচ্ছি। প্রণোদনার ব্যাপারে, কোনো বোনাস পাবে না। প্রত্যেকটা ব্যাংক কর্মকর্তার দায়িত্ব নিচের লেভেলের হলেও ব্যাংকের ক্ষতি হয় এমন কাজ হলে কর্তৃপক্ষকে জানানো ও তাদের নজরে আনা। সেটা গণমাধ্যমের মাধ্যমেও আমাদের নজরে আনতে পারেন। সেটা যদি তারা না করেও তারাও পানিশমেন্টের আওতায় আসবেন।
শাস্তির ভাগটা নিতে হবে।

তিনি বলেন, এটা অস্বীকার করে উপায় নেই আমি নিরীব থাকব, আমার পাশের ঘরে, আমি জানি যে এগুলো হচ্ছে- আমি কাউকে জানাবো না, এটি হয় না। তাহলেতো ওই দুর্ভোগের ভাগাটা আমাকেও নিতে হবে। আমার বোনাসটা তো আসবে না। কারণ ব্যাংকটা তো ক্ষতি হবে। ব্যাংকটা তো আমার, এইটা ভাবে চিন্তা করতে হবে। সবাইকে চিন্তা করতে হবে এই ব্যাংক আমার। কর্মকর্তাকে ভাবতে হবে আমার জীবিকা এখান থেকে আসছে। অথচ আমি এই ব্যাংকে লুট করতে দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, কাজেই আমাকে কিছুটা হলেও কালেক্টিভ পানিশমেন্টের দিকে যেতে হচ্ছে। দায়িত্ব হচ্ছে, যাতে সবাই মনে করে যে, এখানে আমারও ক্ষতি হবে, আমার পরিবারের ক্ষতি হবে- আমি চাই ব্যাংকটা যেন ভালো হয়।

গভর্নর বলেন, ২০ কোটি টাকার বেশি সব ঋণ নতুন করে যাচাই করা হবে। এসব ঋণের জামানত ঠিক আছে কি না, তা দেখা হবে। না থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যাংক পরিচালকদের জবাবদিহি করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা দরকার। ভালো নেতা দরকার। এ জন্য সরকারের কাছে আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। এই সরকার এই আইন পাস করে দিলে সব করা যাবে।

দেশের ব্যাংকিং খাতে আস্থা ফেরাতে আংশিকভাবে সফল হয়েছি বলে মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, আমাদের একটি চ্যালেঞ্জ ছিল যে ব্যাংকিং খাতের ওপর এক ধরনের আস্থা ধরে রাখা। ফিরিয়ে আনতে পেরেছি, সেটি আমি বলবো না। আমরা আস্থা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। সে ক্ষেত্রে আমরা আংশিকভাবে হয়তো সফল হয়েছি। আর দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে একটা স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে আমরা বহুলাংশে সফল হয়েছি।

ইএইচটি/এমআইএইচএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।