গরমে শরবত-জুস বিক্রি জমজমাট


প্রকাশিত: ১১:৪০ এএম, ২৬ মে ২০১৭

স্মরণকালের অসহনীয় গরমে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। গরমের সঙ্গে লোডশেডিং। ফলে ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। যদিও শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। তবে এই গরমে লাভবান হয়েছেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোকান থেকে শুরু করে ফুটপাতের শরবত ও জুস বিক্রেতারা ব্যবসা করছেন জমজমাট। এই গরমে তৃষ্ণা মেটাতে ঠাণ্ডা এক গ্লাস ফলের জুস বা শরবত যেন চাই-ই চাই। এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন এসব ব্যবসায়ীরা। বাড়িয়ে দিয়েছেন জুস, শরবতের দাম। একই সঙ্গে রাজধানীতে ডাবের পানি ও রসালো বিভিন্ন ফলের দামও বেড়েছে।

ক্রেতারা বলছেন, সব কিছুতেই সুযোগ নেন ব্যবসায়ীরা। সাধারণ ভোক্তারা সব সময় ঠকে আসছেন। এবার গরমেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ফলের জুস বা শরবতের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার রাজধানীর তোপখানা রোড, নয়াপল্টন, সেগুনবাগিচার ফুটপাত ও বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, যে ফলের জুস সচরাচর ১০ টাকায় বিক্রি হতো, এই গরমে সেটা ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডাবের দাম বেড়েছে প্রতিটিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা। আগে যে ডাব বিক্রি হতো ৪০ টাকায়, এখন সেটা ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নয়াপল্টন এলাকায় ফুটপাতে এক গ্লাস লেবুর শরবত কিনে খাচ্ছিলেন রিফাত নামে এক ব্যক্তি। তিনি জানালেন, গরমে পানি শূন্যতা পূরণে শরবত খাওয়া জরুরি। কিন্তু হঠাৎ করে লেবুর শরবতের দাম বেড়েছে। প্রতি গ্লাসের দাম দ্বিগুণ বাড়িয়েছে বিক্রেতারা। যেখানে এক গ্লাস লেবুর শরবত নেয়া হতো পাঁচ টাকা সেখানে নেয়া হচ্ছে ১০ টাকা।

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে লেবুর শরবত ব্যবসায়ী নুরুদ্দিন বলেন, চিনি আর লেবুর দাম বেড়েছে। তাই শরবতেরও দাম বাড়িয়ে দিয়েছি। আগে এক হাজার টাকার লেবু কিনলে ৫০০ লেবু পাওয়া যেত। আগে দুই টাকায় একটি লেবু কিনতে পারতাম। এখন সেই লেবু আড়াই টাকা দামে কিনতে হচ্ছে।

তবে আরেক শরবত বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এই গরমে তাদের বিক্রিও বেড়েছে। শরবত বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার শরবত বিক্রি হচ্ছে। তিনি গত ক’দিন আগে এক হাজার টাকার বেশি বিক্রি করতে পারতেন না। গরমের কারণে লেবু ও ট্যাংক মিশ্রিত শরবতের চাহিদা বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা লাভ থাকে আনোয়ারের।

Sarbot

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ডাব বিক্রি করছিলেন রঞ্জু মিয়া। দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে এই বিক্রেতা বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে চাহিদা বেড়ে গেছে। সে অনুযায়ী সরবরাহ কম। তাই ডাবের দাম বেড়েছে।

অপরদিকে বিভিন্ন ফলে জুসের দামও বেড়েছে। রাজধানীর নাটক সরণির ‘ঢাকা জুসবার’ লালবাগের ‘লালবাগ শাহী জুসবার’সহ বেশ কয়েকটি দোকানে বাড়তি দামে জুস বিক্রি করতে দেখা গেছে।

নাটক সরণির ঢাকা জুসবারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আম, লিচু, আনারস, পেঁপে, তরমুজ, আপেল, মালটা, আঙুর, কমলাসহ হরেক রকম ফলের জুস কিনতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকেই।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে মালটার জুস, প্রতি গ্লাসের দাম ৬০ টাকা। আপেল এবং তরমুজের জুস প্রতি গ্লাস ৮০ টাকায়, আনারস ও পেঁপের জুস ১০০ টাকায়, আঙুরের জুস ১২০ ও লিচুর জুস ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কয়েকটি ফলের মিশ্রিত জুস বিক্রি হচ্ছে গ্লাসপ্রতি ১২০ টাকায়।

ক্রেতারা জানায়, এক সপ্তাহ আগেও সব রকমের ফলের জুসের দাম গ্লাসপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা কম ছিল। জুসের দাম বাড়লেও ক্রেতা কমেনি। কারণ একটিই প্রচণ্ড গরম। দেখা গেছে, ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত জুস বিক্রেতারা। নাটক সরণির ঢাকা জুসবারে লিচুর জুস খেতে এসেছেন সেখানকার বাসিন্দা তাহসিনা আরাফি। তিনি বলেন, এই দোকানেই কদিন আগে লিচুর জুস খেয়েছি ১২০ টাকায়। আজ খেতে এসে শুনি প্রতি গ্লাসের দাম ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি হলেও গরমে অন্য কিছু খাওয়ার চেয়ে জুস খাওয়া ভালো। তাই বান্ধবীদের নিয়ে এখানে এসেছি।

এমএ/জেডএ/ওআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।