ক্রেতাশূন্য বেইলি রোডের মার্কেট, লোকসানের শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে মার্কেট-শপিংমল খুললেও ক্রেতার জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে রাজধানীর বেইলি রোডের পোশাকের দোকানগুলোতে। কোনো ব্যবসায়ী বলছেন- তিনদিন পর একজন ক্রেতা পেয়েছেন। আবার কেউ বলছেন- বিক্রি না থাকায় অন্যের কাছ থেকে টাকা ধার করে ইফতারি কিনেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) বেইলি রোডের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অলস সময় বসে আছেন। সবাই যেন ক্রেতার জন্য তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষায়।
অনন্যা শাড়ি বুটিকস-এর মো. করিম বলেন, ‘দোকানে ক্রেতা নেই। অবস্থা খুব খারাপ। আমার পাশের দোকানদার গতকাল ৬০০ টাকা ধার করে ইফতারি কিনেছেন। তাহলে বুঝেন আমাদের অবস্থা কি?’
তিনি বলেন, ‘নিউমার্কেট, গাউছিয়ার দৃশ্য দেখে মানুষ মনে করে মার্কেটে প্রচুর মানুষ। বাস্তবতা হল নিউমার্কেট, গাউছিয়ায় সব সময় ক্রেতা থাকে। ঈদকেন্দ্রীক আমাদের কোনো বিক্রি নেই। ১৫ রোজা হয়ে গেছে, আমরা এখনও ক্রেতা পাচ্ছি না।’
পাশের একটি প্রতিষ্ঠানের মো. আদনান বলেন, ‘তিনদিন পর আজ একটা কাস্টমার (ক্রেতা) পাইছি। এই হলো আমাদের অবস্থা। অথচ ঈদের আর বেশি বাকি নেই। ঈদ উপলক্ষে ৫ লাখ টাকার পণ্য উঠিয়েছি। আরও কিছু পণ্য ওঠানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু লকডাউনের কারণে তা আটকে গেছে।’
ক্রেতা কম হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘রোজার আগে লকডাউন না দিলে হয় তো কিছু ক্রেতা আসত। লকডাউন দেয়ায় এখন মানুষ ঘর থেকে কম বের হচ্ছে। এখন দেখা যাক সামনে কি হয়।’
বেইলি রোডের দোকানগুলোতে ক্রেতার জন্য হাহাকার পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও মৌচাক মার্কেট, ফরচুন শপিংমল, টুইন টাওয়ার মার্কেটে কিছু ক্রেতার আনাগোনা দেখা গেছে।
মৌচাক মার্কেটের ব্যবসায়ী আয়নাল বলেন, লকডাউনের কারণে ক্রেতা কম। যাদের বাসা কাছাকাছি, তারা এখন মার্কেটে আসছেন। আমাদের ধারণা এই মাস শেষ হওয়ার পর ক্রেতা বাড়বে।
তিনি বলেন, গত বছর বিক্রি করতে পারিনি। অনেক লোকসান হয়েছে। যেহেতু গত বছর মানুষ কম কেনাকাটা করেছে, তাই আমাদের ধারণা ছিল এবার ভালো বিক্রি হবে। এই আশায় নতুন মাল তুলেছি। কিন্তু গণপরিবহন না চলাচল করলে এবার খুব একটা বিক্রি হবে না বলে মনে হচ্ছে।’
ফরচুন শপিংমলের ব্যবসায়ী রবিউল বলেন, গাড়ি না চলার কারণে মানুষ মার্কেটে আসছে না। তারপরও মার্কেট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এটাই বড় কথা। আশা করি মার্কেট খোলা থাকলে সামনে কিছুটা হলেও বিক্রি হবে। আর মার্কেট খোলা না থাকলে তো বিক্রিই হবে না। তখন সবাই লোকসান।
এমএএস/এএএইচ/জেআইএম