কয়েকটি জীবন বিমার অবস্থা খুবই নাজুক: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৪৫ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২৩
সিএমজেএফ টকে আইডিআরএ চেয়ারম্যান/ছবি: জাগো নিউজ

কয়েকটি জীবন বিমা কোম্পানির অবস্থা খুবই নাজুক বলে জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী। তিনি বলেন, ‘দু-একটা কোম্পানির আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ, এগুলো এখনই বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’

আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘গ্রাহকের টাকা পরিশোধ না করে বন্ধ করে দেওয়া হলে তারা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই বন্ধ না করে কঠোর মনিটরিং ও অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে কোম্পানিগুলোকে সংকট থেকে বের করে আনার বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তবে তাতেও কাজ না হলে হয়তো বন্ধ করে দেওয়ার পথেই হাঁটতে হবে।’

বুধবার (১৫ মার্চ) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর পল্টনে সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের সভাপতি জিয়াউর রহমান।

জয়নুল বারী বলেন, ‘বিমা খাতে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। সমস্যাও কম নয়। এর মধ্যে কমপ্লায়েন্সের বিষয়গুলো পরিপালন না করা সবচেয়ে বড় সমস্যা। দীর্ঘদিন কমপ্লায়েন্স না থাকায় অনেক কোম্পানির মধ্যে অনিয়ম-দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে। গ্রাহক ও কোম্পানির টাকা অপচয়, অপব্যবহার, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে আত্মসাতের ঘটনাও ঘটেছে। সমস্যার সমাধানে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গ্রাহকের বিমাদাবি পরিশোধ নিয়ে যেসব কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, সেসব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে ডেকে বৈঠক করা হয়েছে। কোম্পানির সম্পদ বিক্রি করে হলেও গ্রাহকের প্রাপ্য টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা মানা না হলে প্রয়োজনে কোম্পানির বোর্ড ভেঙ্গে দেওয়া হবে।’

কাউকে বিমা কোম্পানির গ্রাহকদের টাকা সরিয়ে নেওয়া বা সম্পদ আত্মসাৎ করার সুযোগ দেওয়া হবে না উল্লেখ করে মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, ‘বিমা খাতের বিরাজমান সমস্যাগুলো রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়। আর আইডিআরএর একার পক্ষেও তা সম্ভব নয়। এজন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’

আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা বিমা আইন সংশোধনের মাধ্যমে সময়োপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছি। এ আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, কিছু কিছু জায়গায় অসংগতি আছে, নানা অস্পষ্টতা রয়েছে। এত বেশি ধারায় রেগুলেশন করার কথা বলা আছে, যা একেবারেই বাস্তবায়ন অযোগ্য। তাই বিমা আইন সংশোধন করা জরুরি। এরইমধ্যে সংশোধনীর খসড়া তৈরি শুরু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অতীতে বিমা খাতে যে দুর্নীতি হয়েছে, তার বড় অংশই হয়েছে জমি কেনাকে কেন্দ্র করে। দেখা গেছে, এক কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ ৩০ কোটি টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে। ওই জমি ১০ বা ১৫ বছর পরেও কেনা দামের অর্ধেকেও তা বিক্রি করা যাচ্ছে না। তাই খুব জরুরি না হলে এবং মূল্য যৌক্তিক না হলে কোনো কোম্পানিকে জমি কেনার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।’

মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, ‘বিমা খাতের পেনিট্রেশনের দিক থেকে আমরা ভারতসহ অনেক দেশ থেকেই পিছিয়ে। এ পেনিট্রেশন বাড়াতে হলে নতুন নতুন পণ্য আনতে হবে। বাড়াতে হবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।’

আইডিআরএ চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘বিমা খাতের উন্নয়নে ডিজিটাইজেশনও অনেক জরুরি। নতুন প্রজন্ম অনলাইনে খাবার ও পোশাকসহ নানা পণ্য কিনতে অভ্যস্ত। বিমার প্রোডাক্টও যদি অনলাইনে কেনা যায়, তাহলে তাদের মধ্যে আগ্রহ বাড়বে। তাছাড়া ডিজিটালাইজ করা হলে গ্রাহক তার প্রিমিয়াম জমা হয়েছে কি না, পলিসির কী অবস্থা ইত্যাদি নিজেই যাচাই করতে পারবেন। তাতে একদিকে গ্রাহকের আস্থা বাড়বে, অন্যদিকে অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগও কমে আসবে।’

এমএএস/এএএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।