এশিয়ার বাণিজ্যিক কেন্দ্র হতে পারে বাংলাদেশ: এফবিসিসিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২২ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

এশিয়ার দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হতে পারে বলে মনে করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ভিয়েতনামের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ। ভিয়েতনামের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট ভং দিন হুয়ে।

এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, বাংলাদেশ শিগগির এলডিসি গ্রাজুয়েশনের মাইলফলক স্পর্শ করবে। এরই মধ্যে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছি। স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশকে আসিয়ান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে একাধিক এফটিএ এবং পিটিএ চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে।

আরও পড়ুন: ঋণের শর্ত কতটা পূরণ হলো, জানতে অক্টোবরে আসছে আইএমএফ প্রতিনিধিদল

তিনি বলেন, ভিয়েতনামের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদার এখন সময়ের দাবি। এর ফলে বাংলাদেশ নতুন নতুন বাজারে প্রবেশ আরও সহজতর হবে। বিশেষ করে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য জোরদারে ভিয়েতনাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং ভৌগোলিক অবস্থানে আসিয়ান, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য ব্যবসার সেতুবন্ধন স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হতে পারে বাংলাদেশ।

ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম ঐতিহাসিকভাবে শুধু সার্বভৌমত্বের সংগ্রামের জন্যই সংযুক্ত নয়, বরং জাতি হিসেবে আমরা স্থিতিশীল, অধ্যবসায়ী এবং গতিশীল। এ বছর আমাদের দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি।

তিনি বলেন, বাণিজ্যের পাশাপাশি আমরা দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী। আমাদের রপ্তানিকে বৈচিত্র্যময় করার জন্য সরকার কাজ করছে। ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীরা আমাদের ১০০টি স্পেশাল ইকনোমিক জোনে বিনিয়োগ করে এই যাত্রায় সহযোগী হতে পারেন।

আরও পড়ুন: রিটার্ন দিলে ২২ খাতের আয়ে দিতে হবে না কর

ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট ভং দিন হুয়ে তার বক্তব্যে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের মধ্যে অসাধারণ বন্ধুত্ব বিরাজ করছে। ভারতের পরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ভিয়েতনামের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাণিজ্যিক অংশীদার। সম্প্রতি দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে। আমরা এই সম্পর্ককে আরও বহুদূর এগিয়ে নিতে চাই। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য জোরদারে ভিয়েতনাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ভিসিসিআই) এবং দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এদেশের সরকার ও এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।

সৌজন্য সাক্ষাতের পরে বিকেলে ‘ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার উন্নয়নে নীতি ও আইন বিষয়ক ফোরাম’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়।

আরও পড়ুন: নতুন মডেলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট নিরসন চায় আইএমএফ

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি শমী কায়সার। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য অংশীদারিত্ব দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি বিশেষত্ব। যদিও ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বিদ্যমান কিন্তু এখন আমাদের মধ্যে বাণিজ্যের মধ্যে অনেক সম্ভাবনা বিদ্যমান।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এগ্রো এবং ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি এখন দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের তৈরি পোশাক খাত চীনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক। বিশ্বের সেরা ১০টি সবুজ পোশাক কারখানার মধ্যে শীর্ষ আটটি বাংলাদেশে অবস্থিত। নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা বাড়তে আমাদের দেশে। ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীরা এই বিষয়গুলো ভেবে দেখতে পারে।

ইএআর/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।