গরমে চাহিদা বেড়েছে ফ্যান-এসির, দামও চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৯ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২৪

গরমে নাভিশ্বাস চরমে। রোদের তাপে বাসার বাইরে থাকার অবস্থা নেই। আবার বাসার ভেতরে ফ্যান ছাড়া থাকা যায় না। ঈদের পর থেকে তাপমাত্রা কখনো ৩৫ ডিগ্রি আবার কখনো উঠে যাচ্ছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এমন অসহনীয় তাপমাত্রায় জনজীবন যখন অতিষ্ঠ তখন ভিড় বেড়েছে ফ্যান ও এসির দোকানে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) মিরপুর-১ কো-অপারেটিভ মার্কেটের পেছনে ইলেকট্রনিক মার্কেটের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্রেতাই সিলিং ফ্যান ও স্ট্যান্ড ফ্যান কিনছিলেন।

বিক্রেতারা বলছেন, গত মার্চ থেকে ফ্যান ও এসির চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় জোগানেও টান পড়েছে। ব্র্যান্ডের শপগুলো লোকাল দোকানগুলোতে চাহিদা মতো ফ্যান দিচ্ছে না। এজন্য তাদের নন ব্র্যান্ড ও বিদেশি ফ্যান বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, ইচ্ছামতো দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা।

গরমে চাহিদা বেড়েছে ফ্যান-এসির, দামও চড়া

সুরাইয়া ইলেকট্রনিক নামের একটি দোকানে স্ট্যান্ড ফ্যান দরদাম করছিলেন বিশবিদ্যালয় ছাত্র তরিকুল। তবে দামে না মেলায় ফ্যানটি কিনেননি তিনি। তরিকুল বলেন, ছোট নন ব্র্যান্ডের টাইফুন ফ্যানগুলোর দাম চাইছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। অথচ গত বছর এগুলোর দাম ছিল ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। গরম বেড়েছে এখন এক ফ্যানে কাজ হয় না। তাই আরেকটি ফ্যান কিনতে এসেছি।

আরেকজন ক্রেতা বলেন, ডিফেন্ডার ব্র্যান্ডের ১২ ইঞ্চি ফ্যান কোথাও চাইছে ৩ হাাজার ৫০০ টাকা কোথাও ৪ হাজার টাকা। আর একই ব্র্যান্ডের ১৪ ইঞ্চি ফ্যান চাওয়া হচ্ছে ৫ হাজার টাকা।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট স্ট্যান্ড (৯-১০ ইঞ্চি) বা টাইফুন ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্ট্যান্ড ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ থেকে ৮ হাজার টাকায়। এছাড়া দেশি ব্র্যান্ডের সিলিং ফ্যান ১ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা বিদেশি ব্র্যান্ডের সিলিং ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকায়।

গরমে চাহিদা বেড়েছে ফ্যান-এসির, দামও চড়া

একই ব্র্যান্ডের ফ্যানের ভিন্ন ভিন্ন দাম প্রসঙ্গে বিক্রেতারা বলছেন, কেউ আগের বছরের অবিক্রীত ফ্যান বিক্রি করছেন তারা কিছুটা কমে দিতে পেরেছেন। ফ্যানের দাম কিছুটা বেড়েছে, গরম বাড়লে দাম আরও বাড়বে।

মামুন ইলেকট্রনিকসের স্বত্বাধিকারী মামুন হোসেন বলেন, আমাদের ফ্যান বিক্রি হয় গরম বাড়লে। এখন সিলিং ফ্যানের চাহিদা বেশি। যেহেতু বিদ্যুতের কোনো সমস্যা নেই তাই রিচার্জঅ্যাবল ফ্যানের চাহিদা নেই। আবার বিদ্যুতের সমস্যা না থাকায় ফ্যানও নষ্ট হচ্ছে কম। বিক্রি ভালোই হচ্ছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রিচার্জঅ্যাবল ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৭ হাজার টাকায়।

চাঁদপুর ইলেক্ট্রিক কর্নারের স্বত্বাধিকারী শ্রাবণ বলেন, দেশি ব্র্যান্ডের চাহিদা বেশি। তবে চাহিদা অনুযায়ী ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। মূলত রমজান মাসের শুরু থেকেই এ ক্রাইসিস শুরু করে প্রতিষ্ঠানগুলো।

গরমে চাহিদা বেড়েছে ফ্যান-এসির, দামও চড়া

ফ্যানের পাশাপাশি চাহিদা বেড়েছে এসির। মিরপুর-১ নম্বরে এসকোয়ার ইলেকট্রনিকসে গিয়ে জানা যায়, এক টনের এসি বিক্রি হচ্ছে ৭৪ হাজার টাকায়, দেড় টনের এসি বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ২১ হাজার টাকায়। ভিশন এসি বিক্রি হচ্ছে ৪৭ হাজার ও দেড় টনের ৬৫ হাজার টাকায়। এছাড়া গ্রী এক টনের ৫১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শোরুমগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা বলছেন, ইনভার্টার ও নন-ইনভার্টার দুই এসির বিক্রি ভালো। তবে বেশিরভাগ ক্রেতাই জানেন না, কী ধরনের এসি কিনতে হবে। এছাড়া এসি ইন্সটেলশন চার্জ ১০ হাজার টাকা। আর ক্রেতাদের জন্য সামান্য ডিসকাউন্টের ব্যবস্থা আছে।

কল্যাণপুরের ব্যবসায়ী শরীফ ইকবাল বলেন, আমার ছোট একটা কাপড়ের দোকানে আছে। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে তাতে ফ্যানের বাতাসে কাজ হচ্ছে না। ক্রেতার স্বস্তির কথা ভেবে এসি কিনতে এসেছি। সব কিছু দেখেশুনে একটা দেড় টনের এসি কিনবো।

এসএম/এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।