‘৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দ্রুত স্কুল খুলে দেয়ার পক্ষে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০৪ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২১

অডিও শুনুন

৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দ্রুত স্কুল খুলে দেয়ার পক্ষে সম্মতি জানিয়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে শিক্ষাকার্যক্রম চালানোর পক্ষে মত দিয়েছেন ৭৬ শতাংশ অভিভাবক। এছাড়া ৬২ শতাংশ শিক্ষক চলমান সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে মত দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) এডুকেশন ওয়াচের এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে এ তথ্য জানানো হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এডুকেশন ওয়াচের গবেষক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য মোহাম্মদ মহাসিন, অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ ও আহ্বায়ক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী।

দেশের আটটি বিভাগের আটটি জেলা ও ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশের ২ হাজার ৯৫২ জনের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। তার মধ্যে ১ হাজার ৭০৯ জন শিক্ষার্থী, ৫৭৮ জন শিক্ষক ও ৫৭৬ জন অভিভাবক রয়েছেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংসদ টিভি, অনলাইন, রেডিও ও মোবাইল ফোনে ৩১.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে, ৬৯.৫ শতাংশ অংশগ্রহণ করেনি। ৩৭.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পরিবার বা অন্যদের কাছ থেকে সহায়তা পেয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী এ প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছে, তাদের মধ্যে ৫৭.৯ শতাংশ ডিভাইসের অভাবে অংশগ্রহণ করতে পারছে না।

গ্রামীণ এলাকায় এ হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অনলাইন ক্লাস আকষর্ণীয় না হওয়ায় ১৬.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে না। ৯৯.৩ শতাংশ বাড়িতে নিজে নিজে পড়ালেখা করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনলাইনের ক্লাসে মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের অংশগ্রহণ বেশি। দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পক্ষে অধিকাংশ শিক্ষার্থী-অভিভাবক মত প্রকাশ করেছেন।

গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ধাপে ধাপে স্কুল খুলে দেয়াসহ ছয় দফা সুপারিশ করা হয়েছে। স্কুল খোলার ক্ষেত্রে শহরের চেয়ে গ্রামের স্কুল খুলে দেয়ার প্রতি জোর দেয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে, ৬২ শতাংশ শিক্ষক মনে করেন, করোনার প্রার্দুভাব কম রয়েছে এমন এলাকায় আগে স্কুল খুলে দেয়া দরকার। ৬২ শতাংশের অধিক মনে করেন পড়ালেখার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে এডুকেশন ওয়াচের প্রধান গবেষক ড. মঞ্জুর আহমেদ বলেন, অনলাইন ক্লাসের পরিস্থিতি ও বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার ওপর একটি গবেষণা করা হয়েছে। এখানে দেখা গেছে, মাত্র ৩১.৫ শতাংশ ক্লাসে অংশগ্রহণ করে। বাকিরা ঘরের বাইরে নানাভাবে সময় কাটাচ্ছে। এ কারণে মায়েরা দ্রুত স্কুল খুলে দেয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। স্কুল খুলে দিলে বড় ধরনের কোনো সমস্যা হবে না।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আমাদের তথ্য-উপাত্ত গবেষণা ফলাফলের সঙ্গে সরকারের ৮০ শতাংশ মিলে গেছে। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রতিবেদনটি সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করে স্কুলগুলোকে পুনরায় সচল করতে হবে। তাছাড়া ক্রমান্বয়ে যে বৈষম্য হচ্ছে তা বাড়তে থাকবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে কখন খোলা হবে সে বিষয়ে সরকারের স্পষ্টভাবে ঘোষণা দেয়া উচিত। এতে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিতে পারবে।

এমএইচএম/এমএইচআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।