আজকের এই দিনে
অন্নদাশঙ্কর রায়ের জন্ম
![অন্নদাশঙ্কর রায়ের জন্ম](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2019November/annoda-20230315113801.jpg)
অন্নদাশঙ্কর রায় একজন স্বনামধন্য বাঙালি কবি ও লেখক। তিনি একজন বিখ্যাত ছড়াকারও। ভারতের উড়িষ্যা জেলার এক কায়স্থ রায় পরিবারে ১৯০৪ সালের ১৫ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন।
ছোটবেলায় ঢেঙ্কানলে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ১৯২১ সালে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর সংবাদপত্রের সম্পাদনা শিখতে কলকাতা বসুমতী পত্রিকার সম্পাদক হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষের কাছে যান। কিন্তু এই কাজ ভালো লাগেনি তার। তাই সেসব ছেড়ের তিনি কটকের র্যাভেনশ কলেজ থেকে আই.এ পরীক্ষা দেন এবং তাতে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন।
১৯২৫ সালে বি.এ পরীক্ষাতেও তিনি পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম স্থানাধিকারী হন। ১৯২৭ সালে এম.এ পড়তে পড়তে আই.সি.এস পরীক্ষায় তিনি দ্বিতীয়বারে পূর্ববর্তী রেকর্ড ভেঙে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় হিসেবে এ গৌরব লাভ করেন। সেই বছরেই তিনি সরকারি খরচে আই.সি.এস হতে ইংল্যান্ড যান। সেখানে তিনি দুই বছর ছিলেন। এই সময়ে তার ধারাবাহিক ভ্রমণ কাহিনি পথে প্রবাসে বিচিত্রায় প্রকাশিত হয়। অন্নদাশঙ্করের অনেক লেখা লীলাময় ছদ্মনামে প্রকাশিত হয়েছিল সেসময়।
১৯৩৬ সালে প্রথম নদীয়া জেলার ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজে যোগ দেন। তিন বছর এই পদে থেকে বিভিন্ন জেলায় কাজ করে কুমিল্লা জেলায় জজ হিসাবে নিযুক্ত হন। ১৯৪০ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি সরকারি কাজে নিযুক্ত থাকার পর ১৯৫০ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিচার বিভাগের সেক্রেটারি হন। ১৯৫১ সালে তিনি স্বেচ্ছায় সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন। ১৯৮৬ সালে কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি হন প্রথম সভাপতি এবং আমৃত্যু এই পদে ব্রতী ছিলেন।
অন্নদাশঙ্কর গদ্য ও পদ্য উভয় ক্ষেত্রেই ভুমিকা রেখেছেন। তার সাহিত্যকর্ম বাংলাদেশে বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তার উল্লেখযোগ্য কর্ম- উপন্যাস: যার যেথা দেশ, অজ্ঞাতবাস, কঙ্কারতী, দুঃখমোচন, মর্ত্যের স্বর্গ, অপসারন, আগুন নিয়ে খেলা, অসমাপিকা, পুতুল নিয়ে খেলা, না, কন্।
প্রবন্ধ: তারুন্য, আমরা, জীবনশিল্পী, ইশারা, জীয়নকাঠি, দেশকালপাত্র, প্রত্যয়, নতুন করে বাঁচা, আধুনিকতা, পারী, শিক্ষার সংকট, চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, সাতকাহন। আত্মজীবনী: বিনুর বই, পথে প্রবাসে, জাপানে। ছোটগল্প: প্রকৃতির পরিহাস, দু কান কাটা, হাসন শখী, মন পাহন, যৌবন জ্বালা, কামিনি কাঞ্চন, রুপের দায়।
অন্নদাশঙ্কর রায় সাহিত্যে অবদানের জন্য অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। জগত্তারিণী পদক, দেশিকোত্তম সম্মান, সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার, আনন্দ পুরস্কার, বিদ্যাসাগর পুরস্কার, শিরোমণি পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার, নজরুল পুরস্কার, বাংলাদেশের জেবুন্নিসা পুরস্কার, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি লিট উপাধি পান তিনি। ২০০২ সালের ২৮ অক্টোবর ভারতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
কেএসকে/এমএস