প্রোস্টেট ক্যানসার: নীরব ঘাতকের বিরুদ্ধে সচেতনতার সময় এখনই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৩ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

পুরুষদের মধ্যে একটি মারাত্মক কিন্তু নীরবভাবে বেড়ে চলা রোগ হচ্ছে প্রোস্টেট ক্যানসার। ইউরোলজিস্ট ডা. মাহমুদুর রহমান মাসুদ তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি উল্লেখ করেন, প্রোস্টেট ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় কোনো উপসর্গ ছাড়াই শরীরে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে, যা সময়মতো শনাক্ত না হলে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

প্রোস্টেট হলো পুরুষদের মূত্রাশয়ের নিচে অবস্থিত একটি গ্রন্থি, যার কোষে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটলে এই ক্যানসার হয়। ডা. মাহমুদুর রহমান মাসুদ এর মতে, প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ না থাকায় অনেকেই তা বুঝতে পারেন না। তবে ক্যানসারটি বাড়তে থাকলে দেখা দিতে পারে ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রয়োজন, প্রস্রাব শুরুতে অসুবিধা, প্রস্রাবের ধারা দুর্বল হয়ে যাওয়া, মূত্রাশয় সম্পূর্ণ খালি না হওয়ার অনুভূতি, এমনকি বিরল ক্ষেত্রে প্রস্রাব বা বীর্যে রক্ত দেখা দেওয়ার মতো উপসর্গ। এছাড়া পিঠের নিচের অংশ, নিতম্ব বা উরুতে ব্যথা এবং লিঙ্গ উত্থানে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আরও পড়ুন:

দেশে ক্যানসার রোগী বাড়ছে, প্রতিরোধে দরকার খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন
অক্টোবরের ১৫ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্তের রেকর্ড

ঝুঁকির কারণসমূহ

ডা. মাসুদের মতে, বয়স প্রোস্টেট ক্যানসারের সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ। ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের মধ্যে এ রোগের প্রবণতা বেশি। তাছাড়া পরিবারে ক্যানসারের ইতিহাস, চর্বিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ, অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা, এমনকি জাতিগত কারণও এর ঝুঁকি বাড়ায়।

আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি

বর্তমানে প্রোস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ের রোগীদের ক্ষেত্রে ‘অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণ’ (Active Surveillance) পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, যাতে রোগের অগ্রগতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।

উন্নত পর্যায়ে অস্ত্রোপচার (Radical Prostatectomy) করে প্রোস্টেট গ্রন্থি অপসারণ করা হয়। এছাড়া রেডিয়েশন থেরাপি, হরমোন থেরাপি, কেমোথেরাপি, এমনকি আধুনিক টার্গেটেড থেরাপি ও ইমিউনোথেরাপি এখন কার্যকর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

প্রতিরোধ ও সচেতনতা

ডা. মাসুদ পরামর্শ দিয়েছেন, নিয়মিত ব্যায়াম ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা এবং ৫০ বছর বয়সের পর থেকে প্রতি বছর PSA পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, প্রোস্টেট ক্যানসার যত তাড়াতাড়ি শনাক্ত করা যাবে, ততই বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়বে। তাই লজ্জা বা ভয় না পেয়ে নিয়মিত পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। সচেতনতা, সময়মতো পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই পারে এই নীরব ঘাতককে পরাস্ত করতে।

এসইউজে/এসএনআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।