জরায়ু ক্যান্সার সচেতনতা মাস শুরু

ক্যান্সার প্রতিরোধ ও গবেষণা কেন্দ্রের (সিসিপিআর) উদ্যোগে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে আজ (রোববার) থেকে দেশব্যাপী ‘জরায়ুমুখের ক্যান্সার সচেতনতা মাস’ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত মাসব্যাপী এ কর্মসূচিতে চিকিৎসকদের জন্য শিক্ষা, সমাজের অগ্রসর মানুষদের জন্য উদ্বুদ্ধকরণ ও সাধারণ মানুষের জন্য ব্যাপক সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মস্থলভিত্তিক আলোচনা, তথ্যসম্বলিত পোস্টার, লিফলেট বিতরণ, ‘জননীর জন্য পদযাত্রা’ নামে শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায়ও এ কর্মসূচি পালিত হবে। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় আয়োজকরা এসব তথ্য জানান।
মাসব্যাপী কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটের ক্যান্সার ইপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, এক দশক ধরে সরকারি-বেসরকারি সচেতনতা কার্যক্রমের ফলে স্তন ক্যান্সার নিয়ে জনমনে বিশেষ করে শহুরে শিক্ষিত নারীদের মধ্যে সচেতনতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। কিন্তু জরায়ুমুখের ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতা ও স্ক্রিনিং কার্যক্রম তেমন জোরদার নয়। সাধারণত নিম্ন আর্থসামাজিক শ্রেণির নারীরা এ ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হন।
তিনি জানান, জরায়ুমুখের ক্যান্সারের চেয়ে স্তন ক্যান্সারের আক্রান্তের হার বেশি (স্তন ক্যান্সার ২৩.৯ ও জরায়ুমুখের ক্যান্সার ১৯.৩ শতাংশ) হলেও মৃত্যুর হার প্রায় কাছাকাছি (স্তন ক্যান্সার ১৬.৯ ও জরায়ুমুখের ক্যান্সার ১৫.৬ শতাংশ)। তাই স্তন ক্যান্সার সচেতনতার মতো জরায়ুমুখের ক্যান্সার সচেতনতা কার্যক্রম অত্যন্ত জরুরি।
ডা. রাসকিন আরো জানান, বাল্যবিবাহ, ১৮ বছরের কম বয়সে সন্তানধারণ, অধিক সন্তান, ঘন ঘন সন্তানধারণ, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার অভাব, অপুষ্টি, বহুগামিতা ও হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে নারীরা জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন।
লজ্জা-সংকোচের কারণে আমাদের নারীরা জরায়ু ক্যান্সার নিয়ে কথা বলতে, এমনকি লক্ষণ টের পেলেও পুষে রাখেন, চিকিৎসক ও নিজের পরিবারের কাছে গোপন রাখেন। নারীকে সাহস জোগাতে পরিবারের পুরুষ সদস্যদের এগিয়ে আসতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সাবেরা খাতুন, অধ্যাপক সারিয়া তাসনিম, সহকারী অধ্যাপক ডা. সুমাইয়া বারী, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রপরিচালক মশিউদ্দিন শাকের, ডা. হুমায়রা, মিসেস হোসনে আরা হান্নান, হীল-এর প্রধান জেবুন্নেসা, ক্যান্সার সারভাইভার রোকেয়া রুমি, রোটারি ক্লাবের জ্যোৎস্না পারভীন, সাখাওয়াত হোসেনসহ চিকিৎসক, সারভাইভার ও বিভিন্ন অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
এমইউ/বিএ/এমএস