মানসিক স্বাস্থ্যকে শিক্ষানীতিতে যুক্ত করার আহ্বান
![মানসিক স্বাস্থ্যকে শিক্ষানীতিতে যুক্ত করার আহ্বান](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2019November/aa-1-20220928050322.jpg)
দেশে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে মানসিক রোগীর সংখ্যা, যাদের অধিকাংশের বয়স ৫০ বছরের নিচে। শারীরিক অনেক জটিলতার কারণে এসব মানসিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই এটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের শিক্ষানীতিতে যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মধুমতি হলে ১১তম আন্তর্জাতিক মনোরোগ চিকিৎসক ও ১৩তম সার্ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব পেডিয়াট্রিক আয়োজিত দুদিনের এ সম্মেলন ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর শুরু হবে চট্টগ্রামে।
অনুষ্ঠানে ওয়ার্ল্ড সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আফজাল জাভেদ বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য। এ স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। অটিজমের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যে বাংলাদেশ, ভূটানসহ চারটি দেশ একসঙ্গে কাজ করছে।
‘বাংলাদেশসহ বিশ্বে তরুণদের বড় একটি অংশ মানসিক স্বাস্থ্যহীনতায় ভুগছেন, যাদের ৭৫ শতাংশের বয়স ৫০ বছরের নিচে। ধর্মীয় রীতিনীতি ও পারিবারিক সদাচারণ মানসিক সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে আনে। একই সঙ্গে নাগরিক সমাজকেও এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। বিষয়টিকে যুক্ত করতে হবে দেশের শিক্ষানীতিতে।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ৬৮০ জন মনোবিদ অংশ নেবেন। একইসঙ্গে ৬৮ জন বক্তা বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কথা বলবেন। ওয়ার্ল্ড সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ও ভারতীয় সংস্থার প্রধানসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে কথা বলবেন।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব সাইকিয়াট্রিকের সহ-সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজুর রহমান বলেন, এ সম্মেলন বাংলাদেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসকদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বৈজ্ঞানিক এ সম্মেলনে গবেষণালব্ধ তথ্য তুলে ধরা হবে।
‘এখান থেকে দেশের জনগোষ্ঠীর জন্য যে কথা বলা হবে, তা যদি বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে স্বাস্থ্যসেবায় অনেক বড় পরিবর্তন আসবে।’
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইক্রিয়াটিস্টের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার এখন এ বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা মানুষের দোরগোড়ায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
জাতীয় মানসিক ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত দুই বছরে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি গবেষণা হয়েছে। ২০২২ সালে মানসিক স্বাস্থ্যনীতি যুগোপযোগী করা হয়েছে। ২০১৮ সালে মানসিক স্বাস্থ্যের আইন ও কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে। কাগজে কলমে অনেক কিছুই হয়েছে, এখন কাজ করার সময়।
‘বর্তমানে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতালে প্রতিদিন ৪০০-৬০০ রোগী আসেন, অথচ হাসপাতালটিতে সেই পরিমাণে জনবল নেই। ছয়জন অধ্যাপকের জায়গায় আছেন মাত্র একজন।’
তিনি আরও বলেন, জনবল সংকট থাকলেও দেশে ৬০৩টি সরকারি-বেসরকারি মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কৈশোরবান্ধব কেন্দ্র রয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ছড়িয়ে পড়েছে।’
এএএম/এসএএইচ