ধর্মীয় গোঁড়ামিতে এমআর-এমআরএম সেবাবঞ্চিত নারী: নারীপক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:০৭ পিএম, ০৯ জানুয়ারি ২০২৩

ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণের দেশের অর্ধেকের বেশি নারী মাসিক নিয়মিতকরণ (এমআর) এবং ওষুধের সাহায্যে মাসিক নিয়মিতকরণ (এমআরএম) সেবা পান না। সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবহেলা ও ওষুধ প্রতিষ্ঠানগুলোর জনসম্পৃক্ততার অভাবে এমআর ও এমআরএম সেবা থেকে বঞ্চিত নারীরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সাত মসজিদ রোডে নারীপক্ষ কার্যালয়ে ‘নিরাপদ মাসিক নিয়মিতকরণ অধিকারের দাবিতে এশিয়া মহাদেশে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন প্রকল্প’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সভায় মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন নারীপক্ষের সদস্য এমআর এবং এমআরএম বিষয়ক প্রকল্পের সমন্বয়ক সানিয়া আফরিন।

এমআর এবং এমআরএম সেবার প্রতুলতা ও সেবা পাওয়া নারীদের মূল্যায়ণ বিষয়ে জরিপ করে নারীপক্ষ। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত তিনটি জেলার, পাঁচটি উপজেলা ও ৩৮টি ইউনিয়নসহ মোট ৪৬টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে এমআর সেবা প্রদান বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

জরিপের ফলাফল জানিয়ে সানিয়া আফরিন বলেন, দুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ২৯টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রসহ মোট ৩১টি প্রতিষ্ঠানে এমাআর সেবা দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি জানান, তিনটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ১৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রসহ মোট ২০টি প্রতিষ্ঠানে এমআর ও এমআরএম সেবা দেওয়া হয়। তিনটি মা ও শিশু কেন্দ্রে এমআরএম সেবা দেওয়া হচ্ছে।

সানিয়া আফরিন বলেন, ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৮ জন বলেছেন এমআর বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি না থাকায় তারা সেবা দিতে পারছেন না। অন্যদিকে ১৮ জন বলছেন, ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি (ভালো লাগে না) এবং ধর্মীয় বিধিনিষেধ থাকায় এ সেবা দেন না। এছাড়া এমআরএম ওষুধ অনেক বেশি সহজলভ্য তাই নারীরা এমআর করতে আসেন না।

এসব সুবিধা না পাওয়ায় বরিশাল, বরগুনা ও কুষ্টিয়া জেলায় ২০২০ সালে ৮৬ জন, ২০২১ সালে ৯৬ জন আর ২০২২ সালে অক্টোবর পর্যন্ত ৭৮ জন নারী মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন।

ধর্মীয় গোঁড়ামি প্রসঙ্গে সানিয়া আফরিন বলেন, সেবাদানকারীরা নারীদের সঙ্গে নেতিবাচক আরচণ করেন। হজ করে এসেছি, এটা গুনাহের কাজ, এটা করলে স্কুল-কলেজের মেয়েরা অবাধ যৌনাচারে আকৃষ্ট হবে- এসব অজুহাত দেওয়া হয়। কিন্তু জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তাদের বেতন হয়, সেবা না দেওয়ায় প্রসূতি মৃত্যুর হার ও ঝুঁকি বেশি।

এর ফলে জরায়ু ইনফেকশন, অনিয়মিত মাসিক ও আনসেইফ অ্যাবরশনের মতো ঘটনা ঘটছে বলেও জানান তিনি।

এসএম/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।