দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন

পুতিন কি সত্যিই যুদ্ধ বন্ধে রাজি হবেন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:০১ পিএম, ১৩ মার্চ ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল ছবি: এএফপি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য এখন এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত ১১ মার্চ জানিয়েছেন, ইউক্রেন এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত এক মাসের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পর যুক্তরাষ্ট্র আবারও ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহায়তা চালু করেছে, যা ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ওভাল অফিসে ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধবিরতি রাশিয়ার জন্য লাভজনক নয়। কারণ এটি ইউক্রেনকে ফের রসদ সংগ্রহের সুযোগ দেবে এবং এটি স্থায়ী হয়ে যেতে পারে। কারণ, রাশিয়ার জনগণের মধ্যে যুদ্ধবিরোধী মনোভাব বাড়ছে। যে পক্ষ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করবে, তারা আন্তর্জাতিক নিন্দার শিকার হবে এবং ট্রাম্পের বিরাগভাজন হবে।

আরও পড়ুন>>

কিন্তু পুতিন এখনো তার মূল লক্ষ্য অর্জন করতে পারেননি। তিনি চেয়েছিলেন ইউক্রেনকে পশ্চিমা সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করা, দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরানো এবং ইউক্রেনের সামরিক শক্তিকে চিরতরে দুর্বল করে দেওয়া। যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়া প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ সেনা হারিয়েছে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের মাত্র ১১ শতাংশ ভূখণ্ড দখল করতে পেরেছে, যা ২০১৪ সালে দখল করা সাত শতাংশ ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পুতিন যুদ্ধক্ষেত্রে যা অর্জন করতে পারেননি, তা কূটনৈতিকভাবে ট্রাম্পের কাছ থেকে আদায় করতে চাইবেন। ট্রাম্প অতীতেও রুশ অবস্থানের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। তিনি ইউক্রেনের নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, ন্যাটো সদস্যপদ থেকে দেশটিকে বিরত রাখার পক্ষে কথা বলেছেন এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এখন আশঙ্কা করা হচ্ছে, পুতিন যুদ্ধবিরতির শর্তে নিজের দাবিগুলো জুড়ে দিতে চাইবেন—যেমন ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সহায়তা বন্ধ করা, দেশটিতে আগাম নির্বাচন আয়োজন বা রাশিয়ার দখল করা ভূখণ্ডকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এখন গুরুত্বপূর্ণ হলো এসব শর্ত প্রত্যাখ্যান করা এবং যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতা নিশ্চিত করা।

বিশ্লেষকদের মতে, পুতিন হয়তো দেরি করার কৌশল নেবেন, আলোচনা দীর্ঘায়িত করবেন এবং আরও কিছু সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই কঠোর অবস্থানে থেকে রাশিয়াকে চাপ দিতে হবে। কারণ সাময়িক হলেও এই যুদ্ধবিরতি সংঘাত বন্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো—পুতিন কি সত্যিই যুদ্ধের ইতি টানতে রাজি হবেন?

কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।