অবশেষে ফ্রান্স ত্যাগের অনুমতি পেলেন টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:০৮ পিএম, ১৬ মার্চ ২০২৫
টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পাভেল দুরভ/ ছবি: এএফপি

বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পাভেল দুরভকে সাময়িকভাবে ফ্রান্স ত্যাগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। টেলিগ্রামে কথিত অপরাধমূলক কার্যকলাপের তদন্তের মধ্যেই ফরাসি আদালত তাকে এই অনুমতি দিয়েছেন। শনিবার (১৫ মার্চ) বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রুশ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা দুরভের রাশিয়া ছাড়াও ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সেন্ট কিটসের নাগরিকত্ব রয়েছে। গত ২৫ আগস্ট ফ্রান্সে গেলে দেশটির রাজধানী প্যারিসের একটি বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অবৈধ লেনদেন, মাদক পাচার, জালিয়াতি ও শিশু যৌন নির্যাতনের ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।

টেলিগ্রাম অ্যাপে অপরাধমূলক কার্যকলাপের অনুমতি দেওয়ার অভিযোগে ফরাসি আদালত তাকে অভিযুক্ত করেন। কিন্তু ৫০ লাখ ইউরোর বিনিময়ে তাকে জামিন দেওয়া হয়। তবে শর্ত দেওয়া হয়, প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর একবার তাকে থানায় হাজিরা দিতে হবে ও তিনি ফ্রান্স ত্যাগ করতে পারবেন না। কিন্তু শেষমেশ তাকে ফ্রান্স ত্যাগের অনুমতি দেওয়া হলো।

এএফপির প্রতিবেদন বলছে, কয়েক দিন আগে দুরভ তার ওপর বিধিনিষেধ পরিবর্তন করার অনুরোধ গ্রহণ করলে বিচারক তা গ্রহণ করেন। যার ফলে তিনি কয়েক সপ্তাহের জন্য বিদেশ ভ্রমণ করার সুযোগ পেয়েছেন।

প্রতিবেদন মতে, অনুমতি পাওয়ার পর দুরভ শনবিার (১৫ মার্চ) সকালে ফ্রান্স ছাড়েন। সংস্থাটি আরও জানায়, তিনি দুবাই চলে গেছেন। গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত সাত বছর ধরে তিনি দুবাইতেই বসবাস করছিলেন।

তবে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য টেলিগ্রামের একজন মুখপাত্রের সাথে যোগাযোগ করা হলেওে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। ওই মুখপাত্র বলেন, টেলিগ্রাম পরে এ ব্যাপারে বিবৃতি প্রকাশ করবে।

দুরভ বরাবরই কোনো অন্যায় করার কথা নাকচ করে করে আসছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, টেলিগ্রামে ব্যবহারকারীদের কনটেন্টের জন্য তাকে দায়ী করা উচিত নয়। গত জানুয়ারিতে আদালতের এক শুনানিতে তিনি বলেন, টেলিগ্রাম প্রতি মাসে আইন ভঙ্গের দায়ে দেড় থেকে ২ কোটি ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট সরিয়ে দেয় ও শিশুর অধিকার লঙ্ঘন করে, এমন কনটেন্ট মুছে ফেলে।

এর আগে দুরভ তার গ্রেফতার করার বিষয়টিকে বিভ্রান্তিকর বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, গ্রেফতারের পরিবর্তে ফ্রান্স কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল, তাদের অভিযোগ নিয়ে টেলিগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ করা। টেলিগ্রাম অ্যাপটি ‘দুর্বৃত্তদের স্বর্গরাজ্য’ বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটিও প্রত্যাখ্যান করেন দুরভ।

তিনি বলেন, টেলিগ্রাম অ্যাপের বিষয়ে তদন্তের সিদ্ধান্তটি ছিল বিস্ময়কর। ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষকে যোগাযোগের জন্য তিনি বিশেষ হটলাইন তৈরি করে দিয়েছিলেন। তারা চাইলে যেকোনো সময় টেলিগ্রামের ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে পারত।

পাভেল দুরভ বলেন, যদি কোনো দেশ ইন্টারনেট পরিষেবা নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়, তবে প্রতিষ্ঠিত চর্চা হলো পরিষেবাটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া। প্রাক-স্মার্টফোন যুগের আইন ব্যবহার করে একজন সিইওকে প্ল্যাটফর্মে তৃতীয় পক্ষের দ্বারা সংঘটিত অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা একটি বিভ্রান্তিকর পদক্ষেপ।

সূত্র: এএফপি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।