ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানালো না ভারত, কী স্বার্থ নয়াদিল্লির?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:২০ পিএম, ১৬ জুন ২০২৫
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও নরেন্দ্র মোদী। ফাইল ছবি: পিটিআই

ইরানে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা জানিয়েছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)। তবে সেই নিন্দা বিবৃতিতে যোগ দেয়নি ভারত। বিষয়টি নিয়ে জোটের মধ্যে মতপার্থক্যের ইঙ্গিত দেখা দিয়েছে। ভারতের এই অবস্থান প্রশ্ন তুলেছে— দেশটি কি ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে? না কি এটি কেবল একটি কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষা?

কী বলেছে এসসিও?

চীনের নেতৃত্বাধীন এই রাজনৈতিক-নিরাপত্তা জোটে চীন, রাশিয়া, ইরান, ভারতসহ মোট ১০টি দেশ রয়েছে। সম্প্রতি ইসরায়েল তেহরান ও অন্যান্য ইরানি শহরে যে হামলা চালিয়েছে, তাতে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক, পরমাণু বিজ্ঞানী ও আইআরজিসি কমান্ডারও রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন>>

এসসিও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থি। তারা বলেছে, এই হামলা ইরানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন এবং এটি শুধু আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ভারতের ভিন্ন অবস্থান

ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা ওই বিবৃতির আলোচনায় অংশ নেয়নি এবং তা অনুমোদনও করেনি। দিল্লির ভাষ্য, আমরা উভয় দেশের (ইসরায়েল ও ইরান) সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখি এবং উত্তেজনা প্রশমনের পক্ষে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তবে এতে ইসরায়েলকে দায়ী না করে বরং উভয় পক্ষকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ভারত কি ইসরায়েলের পক্ষ নিচ্ছে?

সরাসরি নয়, কিন্তু ভারত যে ইসরায়েলবিরোধী বিবৃতিতে সই করেনি, তা ইসরায়েলকে কৌশলগত সুবিধা দিয়েছে। এর আগে জাতিসংঘে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে আনা প্রস্তাব থেকেও ভারত বিরত ছিল।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন>>

বিশ্লেষক কবীর তানেজা মনে করেন, দিল্লির এমন আচরণের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির সম্ভাবনা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান প্রভাব ফেলছে। জুলাইয়ের আগেই যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর ২৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে পারে— এ নিয়ে আলোচনার ভেতরে রয়েছে দিল্লি।

ভারসাম্য রক্ষার কূটনীতি

ভারতের এই অবস্থান ‘ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা’ বলেও দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। একদিকে ইসরায়েল ভারতের অন্যতম প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী। গাজা যুদ্ধের সময় ভারতীয় কোম্পানিও ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি করেছে। অন্যদিকে, ইরান থেকে জ্বালানি আমদানি ও চাবাহার বন্দর প্রকল্পে ভারতের বহু বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

এখন ভারতের এই কৌশলগত অবস্থান অনেক বেশি স্বার্থকেন্দ্রিক। একদিকে এসসিও’র বিবৃতিতে সই না করে চীন-রাশিয়া-ইরান জোটের থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখছে, আবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট না করে আগামী দিনের বাণিজ্য ও নিরাপত্তা স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখতে চাইছে। তবে এই ভারসাম্য কতদিন টিকবে, তা নির্ভর করছে সংঘাত কত দূর গড়ায় তার ওপর।

সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।