শরণার্থী-আশ্রয়প্রার্থীদের কাজের অনুমতির মেয়াদ কমালো যুক্তরাষ্ট্র
বিদেশি শরণার্থী-আশ্রয়প্রার্থীসহ যেসব অভিবাসী দেশটিতে স্থায়ী হওয়ার জন্য আইনি সহায়তা নিচ্ছেন, তাদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের অনুমতির মেয়াদ কমালো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। আগে যেখানে এই মেয়াদ ছিল ৫ বছর, সেখানে তা নামিয়ে আনা হয়েছে ১৮ মাসে।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন সময়ে এই সিদ্ধান্ত এলো, যখন গত সপ্তাহে আফগানিস্তান থেকে ২০২১ প্রবেশ করা এক আফগান নাগরিকের গুলিতে দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্য নিহত হন। ওই ঘটনা পর প্রশাসনের চলমান কঠোর অভিবাসন নীতির অংশ হিসেবে ১৯টি দেশের নাগরিকদের অভিবাসন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলো।
এমপ্লয়মেন্ট অথরাইজেশন ডকুমেন্টস (ইএডি) বা ওয়ার্ক পারমিট মূলত এক ধরনের সরকারি নথি। আগে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকরা ইএডি লাভ করলে তা ৫ বছর পরপর নবায়ন করতে হতো। এখন প্রতি ১৮ মাস পরপর নবায়ন করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শরণার্থী, আশ্রয়ের জন্য আবেদনকারী, নিজ দেশে ফেরত পাঠানো থেকে বেঁচে যাওয়া অভিবাসীদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সেবার (ইউএসসিআইএস) পরিচালক জোসেফ এডলোভ ২৬ নভেম্বর ওয়াশিংটনে ঘটে যাওয়া এ গুলির ঘটনাকে ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ কমানোর অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কর্মসংস্থান অনুমতির সর্বোচ্চ মেয়াদ কমানো হলে নিশ্চিত করা যাবে যে যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করতে আগ্রহী কেউই জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে না কিংবা ক্ষতিকর, দেশবিরোধী মতাদর্শ ছড়াবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের রাজধানীতে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ওপর যে বিদেশি নাগরিক হামলা চালিয়েছেন, তাকে আগের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল। এই ঘটনার পর আরও স্পষ্ট হয়েছে যে ইউএসসিআইএসকে অভিবাসীদের নথিপত্র ঘনঘন যাচাই-বাছাই নিশ্চিত করতেই হবে।
২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের সময়েই ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ক্ষমতায় গেলে অবৈধ অভিবাসী ও অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর পদক্ষেপ নেবেন তিনি।
সেই অনুযায়ী শপথ গ্রহণের পর এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। তার সেই স্বাক্ষরের পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ কমাতেও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। সেসবের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো- এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়ানো। এই ভিসার মাধ্যমে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কর্মী হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী ও গবেষকদের যুক্তরাষ্ট্রে আনতে পারে। গত সেপ্টেম্বরে এই ভিসার বাৎসরিক ফি ১ হাজার ৫০০ ডলার থেকে ১ লাখ ডলারে উন্নীত করে ট্রাম্প প্রশাসন।
সূত্র: এএফপি
এসএএইচ