ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্ত

ফ্যাক্ট-চেকারদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪০ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
ফ্যাক্ট-চেকারদের ভিসা দেবে না ট্রাম্প প্রশাসন/ গ্রাফিকস: জাগোনিউজ

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীদের জন্য নতুন করে কঠোর যাচাই-বাছাই শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। গত বুধবার প্রকাশিত এক অভ্যন্তরীণ নথিতে জানানো হয়েছে, যেসব বিদেশি কর্মী বা তাদের পরিবারের কেউ ‘বাকস্বাধীনতা দমন’, তথ্য নিয়ন্ত্রণ, ভুল তথ্য মোকাবিলা বা ফ্যাক্ট-চেকিংয়ের মতো কাজে জড়িত—তাদের ভিসা বাতিল বা আবেদন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে।

এইচ-বি ভিসা মূলত উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশি কর্মী নিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রধান ভরসা। ভারত-চীনসহ বহু দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ কর্মী আনার ক্ষেত্রে এই ভিসা অপরিহার্য।

গত ২ ডিসেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি বার্তা যুক্তরাষ্ট্রের সব দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে। সেখানে কনস্যুলার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এইচ-১বি আবেদনকারী ও তাদের সঙ্গে থাকা পরিবারের সদস্যদের চাকরির ইতিহাস, সিভি এবং লিংকডইন প্রোফাইল খতিয়ে দেখতে।

আরও পড়ুন>>
দক্ষ কর্মী ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে যেতে গুনতে হবে এক লাখ ডলার
যুক্তরাষ্ট্রে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনকারীদের জন্য নতুন নির্দেশনা
স্টুডেন্ট ভিসায় ইউরোপ-আমেরিকার কড়াকড়ি, বিকল্প হতে পারে যেসব দেশ
যুক্তরাষ্ট্রের ‌‌‘এইচ-১বি ভিসার বিকল্প হতে পারবে চীনের ‘কে-ভিসা’?

কোনো আবেদনকারীর সঙ্গে ‘মিথ্যা তথ্য প্রতিবাদ’, ‘ডিজইনফরমেশন মোকাবিলা’, ‘অনলাইন সেফটি’, ‘কনটেন্ট মডারেশন’ বা ‘ফ্যাক্ট-চেকিং’-এর মতো কাজের যোগসূত্র পাওয়া গেলে তাকে ‘যুক্তরাষ্ট্রে সুরক্ষিত মতপ্রকাশ দমনে জড়িত’ হিসেবে বিবেচনা করে ভিসা অযোগ্য ঘোষণা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নথিতে বলা হয়, ‘এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে আবেদনকারীকে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের সংশ্লিষ্ট ধারায় অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।’

নতুন নির্দেশনার বিষয়টি এর আগে প্রকাশ হয়নি। বার্তায় আরও বলা হয়, প্রযুক্তি খাতে অংশগ্রহণের কারণে এইচ-১বি শ্রেণির আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হবে। কারণ এই খাতের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা আর্থিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, যেখানে ‘যুক্তরাষ্ট্রে সুরক্ষিত মতপ্রকাশ দমন’-এর অভিযোগ তুলেছে প্রশাসন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রে এমন বিদেশিদের কাজ করতে দিতে চাই না, যারা মার্কিনিদের মতপ্রকাশ রোধ করবে।’ তিনি আরও দাবি করেন, অতীতে ট্রাম্প নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ব্লক হওয়ার ঘটনার শিকার হয়েছেন, তাই অন্য মার্কিনিদের ‘সেই বিপদে পড়তে দিতে চান না’।

ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে রক্ষণশীল মতের দমন নিয়ে অভিযোগ তুলে আসছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাজনীতিতেও তারা বারবার মন্তব্য করে জানিয়েছে, ‘ডিজইনফরমেশন’ প্রতিরোধের নামে অভিবাসনবিরোধী মত বা ডানপন্থি রাজনীতির দমন করা হচ্ছে।

এ বছরের মে মাসে রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিও যুক্তরাষ্ট্রে বাকস্বাধীনতা দমনে জড়িত বিদেশি নাগরিকদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন। তিনি উল্লেখ করেছিলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিদেশি কর্মকর্তারাও এ নীতির আওতায় আসতে পারেন।

এর আগেই ট্রাম্প প্রশাসন স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনকারীদের ওপর কঠোর নজরদারি শুরু করেছে। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য বা পোস্টের সূত্র ধরেও তদন্ত করা হচ্ছে। একইসঙ্গে সেপ্টেম্বরে এইচ-১বি ভিসার ওপর নতুন ফিসহ আরও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।

সূত্র: রয়টার্স
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।