ওবামার মন্তব্যে ভারতে উত্তাপ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মন্তব্যে ভারতে রাজনৈতিক উত্তাপ দেখা দিয়েছে। ধর্মীয় সহিষ্ণুতা নিয়ে ওই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে একইসঙ্গে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেক ফাস্টে ওবামা বলেন, ‘ভারত অতুলনীয় সুন্দর, বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ দেশ। কিন্তু এই দেশে গত কয়েক বছর বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের আক্রমণ করছেন অন্য ধর্মের মানুষেরা, শুধুমাত্র নিজেদের ঐতিহ্য ও গোঁড়া বিশ্বাসের কারণে। যে গান্ধীজি ভারতকে উদার করতে সাহায্য করেছিলেন, এ ধরনের অসহিষ্ণুতা দেখে তিনিও মর্মাহত হতেন।’
এর আগে ভারত সফরের শেষ দিনে ওবামা ভারতীয় সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা উল্লেখ করে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা নিয়ে বক্তব্য দেন। বিরোধীরা এ নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলায় অবশেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে বিবৃতি দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামতে হয়।
আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল ওবামার মন্তব্য প্রসঙ্গে মোদিকে কটাক্ষ করে বলেন, মোদিই এর জবাব দেবেন। কারণ ওবামা তো ওর খুব ভালো বন্ধু!
শুক্রবার সমাজবাদী পার্টির নেতা ও উত্তরপ্রদেশের সিনিয়র মন্ত্রী আজম খান বলছেন, মোদি দাবি করেন, ওবামার সঙ্গে তার দীর্ঘ ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব আছে। কিন্তু ভারত থেকে ফিরে যাওয়ার সময় তিনি সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে সতর্ক করে গেছেন।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ যুগ্ম সাধারণ সচিব সুরেন্দ্র জৈন বলেছেন, ভারতে ধর্মের কথা প্রচারের আগে ওবামার উচিত নিজের দেশের দিকে তাকিয়ে দেখা। যদি ধর্মের কথা প্রচার করতেই হয়, তাহলে সেই সব খ্রিস্টান মিশনারিদের কাছে তা প্রচার করুন, যারা ধর্মান্তর করাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, এদের একটি শাখা দেশবিরোধী কার্যকলাপেও যুক্ত।
বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক দেখা দেওয়ায় ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, সহিষ্ণুতার ক্ষেত্রে ভারতের বৃহৎ সাংস্কৃতিক ইতিহাস রয়েছে। কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা সেই ইতিহাসকে বদলে দিতে পারে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলছেন, ‘ধর্মীয় সহিষ্ণুতার শিকড় আমাদের ভারতীয় ঐতিহ্যের মধ্যেই রয়েছে। ভারতই বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের সব গোষ্ঠী যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন পার্সি ও ইহুদিরা। ভারতীয় সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব এখানে ধর্ম, সম্প্রদায় বা জাতির ভিত্তিতে কখনও ভেদাভেদ করা হয়নি।
এএইচ/আরআই