রোহিঙ্গা ইস্যু : যে কারণে নিশ্চুপ সু চি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৫১ এএম, ৩০ মে ২০১৫

মিয়ানমারের অবিসংবাদিত নেত্রী অং সান সু চিকে বিশ্ববাসি চিনতো দুর্বলের পক্ষের মানুষ হিসেবে। এই ব্যক্তিত্বের প্রতিদানে শান্তিতে নোবেলও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি রোহিঙ্গা ইস্যুতে যেন খুজেই পাওয়া যাচ্ছে না সু চিকে। রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে বিশ্ব সরব হলেও সেই সু চির মুখে আজ কুলুপ।  

তবে সু চির স্ববিরোধী এ আচরণের কারণ অনেকটাই পরিষ্কার। এএফপির বিশ্লেষনে দেখা গেছে, আসন্ন নির্বাচনে জিততেই সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের নিয়ে মাথাব্যথা নেই বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের বিরোধীদলীয় এই নেত্রীর।

এ বছর সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় ঢুকতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে বহু রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি। নৌদুর্ঘটনা ছাড়াও এসব মৃত্যুর পেছনে আছে নানাবিধ নির্যাতনের কাহিনী। বহু গণকবরের সন্ধান মিলেছে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায়। এ অবস্থায় মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের করুণ পরিণতির কথা উঠেছে সবচেয়ে বেশি। এমনকি বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার কথা বলতে ব্যাংককে বৈঠক করেন আঞ্চলিক দেশগুলোর নেতারা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই মুসলিম রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে চুপচাপ রয়েছেন সু চি।

এই অনীহার কারণে সম্প্রতি তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামার তিরস্কার শুনতে হয়েছে সু চিকে। দালাই লামা বলেন, এটা খুবই দুঃখের বিষয়। আমি আশা করেছিলাম, এ ইস্যুতে সু চি কিছু একটা করতে পারবেন।

গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে সাবেক জান্তা সরকারের আমলে ১৫ বছর বন্দি ছিলেন সু চি। এই ত্যাগ তাঁকে জায়গা করে দেয় বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিকামী নেতাদের দলে। কিন্তু ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে আচরণ পাল্টাতে থাকে তার। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য নিবেদিত একটি সত্তা ক্রমে পরিণত হতে থাকে কট্টর রাজনীতিবিদে। আর এ ক্ষেত্রে তার অন্যতম লক্ষ্য হলো, আসন্ন নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় যাওয়া।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডাব্লিউ) এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক ফিল রবার্টসন বলেন, যেখানে মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার দায়ভার বহন করতে হচ্ছে, সেখানে একজন মানবাধিকারকর্মী হিসেবে নিজের নৈতিক ক্ষমতা খাটাতে সু চি ব্যর্থ হচ্ছেন।

গত ১৯ মে জনসম্মুখে সু চি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি সরকারকে সমাধান করতে হবে। মূলত বিষয়টি নিয়ে কয়েক মাসের মধ্যে এটাই তার একমাত্র `জটিল` উক্তি। এর সমর্থন করে সু চির জীবনী লেখক পিটার পোফাম বলেন, রাজনীতির দাবা খেলায় এই মুহূর্তে এমন জটিল চাল দেওয়া ছাড়া সু চির কোনো উপায় নেই।  

এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।