যুক্তরাজ্যে প্রথম অক্সফোর্ডের টিকা নিলেন ৮২ বছরের বৃদ্ধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:০৪ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০২১

ফাইজার-বায়োএনটেকের পর এবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা দেয়া শুরু করেছে যুক্তরাজ্য। অক্সফোর্ড শহরের চার্চিল হাসপাতালে সোমবার সকালে ৮২ বছর বয়স্ক ব্রায়ান পিংকারকে টিকাদানের মাধ্যমেই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে অক্সফোর্ডের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলো। ব্রায়ান কিডনির সমস্যায় ভুগছেন।

অক্সফোর্ডের তৈরি এই টিকাটি অন্যান্য করোনাভাইরাসের টিকার চেয়ে সহজে সংরক্ষণ ও বহন করা যায় এবং এটি দামেও অন্যগুলোর চেয়ে সস্তা। তাই এই টিকা নিয়ে বিশ্বব্যাপী বেশ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এর মধ্যেই এই টিকার জন্য সব মিলিয়ে ৩শ কোটিরও বেশি ডোজের অর্ডার পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশও ভারতের মাধ্যমে এই টিকা কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

তবে ভ্যাকসিন রফতানিতে ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এমন খবরে বাংলাদেশে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তারা সত্যিই এধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কি না, দিলে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আসবে কবে- এমন প্রশ্ন ঘুরপাঁক খাচ্ছে সবার মনে। এমন পরিস্থিতিতে এশিয়া অঞ্চলে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের উৎপাদনকারী সিরাম ইনস্টিটিউট যে বক্তব্য দিয়েছে, তাতেও নিশ্চিত নয় বাংলাদেশে করোনা ভ্যাকসিনের ভবিষ্যৎ।

সোমবার ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি বিবিসিকে জানিয়েছে, তাদের ওপর ভ্যাকসিন রফতানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। সিরাম ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াঙ্ক সেন বলেছেন, ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার যে খবর বেরিয়েছে, তা পুরোপুরি সঠিক নয়। ভ্যাকসিন রফতানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তবে তা রফতানির অনুমতিও নেই তাদের কাছে। এ কর্মকর্তার কথায়, সিরাম ইনস্টিটিউট বিদেশে ভ্যাকসিন রফতানির অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, যা পেতে কয়েকমাস লেগে যেতে পারে।

এদিকে, ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকাদান কর্মসূচির সূচনাকে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন। যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি কাউন্টিতে একযোগে এই টিকা দেয়া শুরু হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার টিকা ইতোমধ্যেই প্রস্তুত রয়েছে।

অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদন দেয়ার ফলে টিকাদানের গতি অনেকটা বেড়ে যাবে কারণ এই টিকা স্বল্পমূল্যের এবং সহজেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নেয়া যায়। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এই টিকা সাধারণ ফ্রিজেই সংরক্ষণ করা যায়, যেখানে ফাইজারের টিকা সংরক্ষণ করতে হয় ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়।

এদিকে, অক্সফোর্ডের টিকা নেয়া প্রথম ব্যক্তি হিসেবে পিংকার বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, তিনি বেশ সন্তুষ্ট। টিকার কারণে তিনি করোনার প্রকোপ থেকে বাঁচবেন বলে আশা প্রকাশ করে বলেন, এবার মনে হচ্ছে আমি হয়তো আগামী বছর আমার স্ত্রী শার্লির সঙ্গে আমাদের ৪৮তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করতে পারব।

ইংল্যান্ডের ছয়টি হাসপাতালে প্রথম দফায় প্রায় ৫৩ হাজার ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়া হবে। আগামী দিনগুলোতে এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। গত মাসে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ফাইজারের তৈরি টিকা দিয়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে ব্রিটেন। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১০ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে।

টিটিএন/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।