সারাদেশে এক দামে ভ্যাকসিন চান মমতা
ভ্যাকসিন নিয়ে আবারও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভ্যাকসিনের দাম নিয়ে যে বিভক্তি তা বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তার মতে, সারাদেশে ভ্যাকসিনের সমতা রাখার পাশাপাশি দেশবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেয়া উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের।
তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, ‘এই কোভিড নরেন্দ্র মোদির অবদান। তিনি ভ্যাকসিন লুকিয়ে রেখেছিলেন। তাই মানুষ মারা যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, দিল্লি যদি আগে থেকে ভ্যাকসিন পেত তাহলে এমন অবস্থা হতো না। এই নেত্রীর অভিযোগ, ‘মোদির কাছে ভ্যাকসিন চাওয়া হয়েছিল। টাকার বিনিময়ে ভ্যাকসিন নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হলেও তা দেওয়া হয়নি।’
তিনি মোদিকে আক্রমণ করে বলেন, ‘বিজেপি রাজনৈতিকভাবে বলবে ওয়ান ন্যাশন, ওয়ান পার্টি, ওয়ান লিডার কিন্ত ভ্যাকসিনের সময় বলবে, ওয়ান ভ্যাকসিন মেনি প্রাইস। এক ভ্যাকসিনের এক দাম হবে। এটা ব্যবসার সময় নয়। সকলকে এক দামে ভ্যাকসিন দিতে হবে।’
পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন। মাস্ক পরার বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে বলেছেন মমতা।
আগামী ১ মে থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সী সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। এরপর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল কত টাকা হতে চলেছে ভ্যাকসিনের দাম? শেষমেশ টিকার দাম নির্ধারিত করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন রাজ্য সরকারকে কোভিশিল্ড দেওয়া হবে ৪শ টাকায় এবং বেসরকারি হাসপাতালে এই টিকা পাওয়া যাবে ৬শ টাকায়। অপরদিকে কেন্দ্রকে ১৫০ টাকা প্রতি ডোজ মূল্যে কোভিশিল্ড সরবরাহ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারত। সে কারণে ভ্যাকসিনই এখন একমাত্র ভরসা। দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ লাখের বেশি মানুষ নতুন করে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। বিশ্বে এই প্রথম কোনও দেশে একদিনে ৩ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেন। অপরদিকে মারা গেছে ২ হাজারের বেশি মানুষ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার সকালে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ১৪ হাজার ৮৩৫, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছে ভারত।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে ২ হাজার ১০৪ জন। অর্থাৎ একদিন আগের তুলনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। ভারতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার ৯৬৫ জন।
ভারতে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র, কেরালা, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ এবং দিল্লি। মোট সংক্রমণের বেশিরভাগই এসব রাজ্যে।
টিটিএন/জিকেএস