করোনাভাইরাস : ভারতে টিকার ঘাটতি ‘প্রকট’ হচ্ছে
ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত্যুর মিছিল বাড়তে থাকলেও টিকা দেয়ার গতি কমতে শুরু করেছে। টিকার ঘাটতি এর প্রধান কারণ বলে বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
এই পরিস্থিতিতে দেশটির শিল্পমহল থেকে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোও মনে করছে, করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে কয়েক সপ্তাহের লকডাউন ছাড়া উপায় নেই। এমনকি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও বলেছেন, লকডাউনই এখন একমাত্র উপায়।
রাহুল বলেন, মোদি সরকার সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পে ১৩,৪৫০ কোটি টাকা খরচ করছে। তার বদলে ৪৫ কোটি মানুষের পুরো টিকাকরণ হত অথবা ১ কোটি অক্সিজেন সিলিন্ডার হত। এই টাকা দিয়ে ২ কোটি গরিব পরিবারকে ৬০০০ হাজার টাকা করে দেওয়া যেত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অহং মানুষের জীবনের থেকেও বড়। টিকা, অক্সিজেনের অভাবের মধ্যে প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও সরকারের অগ্রাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
করোনার ধাক্কা সামলাতে যাতে আবার যেন লকডাউন জারি না করতে হয়, সেজন্য বহুদিন ধরেই শিল্পমহল দাবি করছে, দ্রুত দেশের সকলের জন্য টিকাকরণের ব্যবস্থা হোক।
কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ২.৪৮ কোটি ডোজ় টিকা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মাত্র ১.৪৮ কোটি ডোজ় টিকা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ মাসের প্রথম সপ্তাহের তুলনায় শেষ সপ্তাহে টিকাকরণ ৪০ শতাংশ কমেছে। মে মাসের গোড়ায় তা আরও কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা এর জন্য টিকার অভাবকে দায়ী করলেও দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তারা তা মানতে রাজি নন। তাদের বক্তব্য, বিভিন্ন এলাকায় চলাফেরায় বিধিনিষেধের ফলে টিকাকরণ কম হচ্ছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, ১ মে থেকে কাগজে-কলমে ৪৫ বছরের কম বয়সীদের টিকাকরণ শুরু হলেও, মাত্র ১২টি রাজ্যে ১৮-৪৪ বয়সিদের জন্য টিকা মিলছে। এখনও পর্যন্ত এই বয়সের মাত্র ৬.৬২ লক্ষ মানুষ এক ডোজ় টিকা পেয়েছেন। ১২টি রাজ্যেও অধিকাংশ জায়গায় টিকা মিলছে না।
এই পরিস্থিতিতে রাহুল গান্ধী মত দিয়েছেন, এখন করোনা ঠেকাতে পুরো লকডাউনই একমাত্র উপায়। কেন্দ্রীয় সরকারের নিষ্ক্রিয়তার ফলে বহু মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। গরীব মানুষের জন্য রোজগারের বন্দোবস্তে ‘ন্যায়’-এর মতো প্রকল্প দরকার।
গত বছর হঠাৎ লকডাউনের ফলে ভারতের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ায় মোদি সরকার এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে লকডাউন এড়িয়ে যেতে চাচ্ছে। কিন্তু সোমবার রাতে বণিকসভা সিআইআই মত দিয়েছে, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে দেশ জুড়ে ‘সব থেকে কড়া পদক্ষেপ’ দরকার। ব্যবসায়ীদের সংগঠন সিএআইটিরও একই মত।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা অ্যান্টনি ফাউচি কয়েক দিন আগে পরামর্শ দিয়েছিলেন, ভারতে কয়েক সপ্তাহের জন্য লকডাউন প্রয়োজন।
এমকে/জিকেএস