ভিন্ন ধারার ছবি ও চরিত্রে কাজ করতে চাই : মুনমুন
দেড় দশক আগেও চিত্রনায়িকা মুনমু্নের জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। ১৯৯৭ সালে ‘মৌমাছি’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে প্রবেশ করেন তিনি। তারপর বেশ কয়েক বছর দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন মান্না, আমিন খান, শাকিব খানসহ শীর্ষ সব নায়কদের বিপরীতে। মাঝে হঠাৎ করেই দূরে সরে গিয়েছিলেন চলচ্চিত্র থেকে।
আশার কথা হলো, মান-অভিমান ভুলে আবারো বড় পর্দায় ফিরছেন মুনমুন। সম্প্রতি বেশ ক’জন নির্মাতার সঙ্গে কথা হয়েছে নতুন ছবিতে অভিনয় করা নিয়ে। সেগুলোতে সময়ের সেরা নায়কদের সঙ্গে নায়িকা হয়েই কাজ করেবন তিনি। সম্প্রতি মিনহাজ অভি পরিচালিত ‘মেঘকন্যা’ চলচ্চিত্রের একটি আইটেম গানে পারফর্ম করবেন বলে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এই নায়িকা তার নতুন করে ফেরা ও চলচ্চিত্র নিয়ে সাম্প্রতিক ভাবনা কথা জানালেন জাগো নিউজের বিনোদন বিভাগে-
জাগো নিউজ : হুট করে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলেন?
মুনমুন : আমি যখন চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে যাই তখন ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা যাচ্ছে-তাই ছিল। ভালো ছবিতে কাজ করলেও ছবি মুক্তির পর দেখা যেত এর নির্মাণের সাথে সংশ্লিষ্টরা ছবিতে বিভিন্ন অশ্লীল সিকোয়েন্স জুড়ে দিত। আর এটা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছিল। সেজন্য ক্ষোভে-অভিমানে মিডিয়া থেকে কয়েক বছর দূরে ছিলাম।
জাগো নিউজ : তারকাখ্যাতি, ভক্তদের ভালোবাসা, রঙিন জীবন- এইসব মিস করতেন না?
মুনমুন : প্রচণ্ড। লাইট, ক্যামেরা, নাচ, গান আর অভিনয় এসব কিছুর সাথে আমার সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। তাছাড়া এই অঙ্গনের মানুষগুলোকে আপন মনে হতো। আমরা ছিলাম সবাই একটা পরিবারের মত। ছবি মুক্তির পর দর্শকদের হই হুল্লোড়, ভালোবাসা এইসব ভীষণ মিস করতাম।
জাগো নিউজ : আপনি তো দুটি ছবিতে কাজ করছেন। সেগুলোর কী খবর?
মুনমুন : ড্যানি সিডাক ভাইয়ার ‘কাঁসার থালায় রূপালী চাঁদ’ ছবিটি সরকারি অনুদানের। এখানে আমি গ্রামের সাধারণ মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। যার ছোটবেলা থেকেই নায়িকা হওয়ার ইচ্ছা থাকে। একসময় গ্রামের কয়েকজন আমাকে শহরে নিয়ে আসে নায়িকা বানানোর জন্য। যে চক্রটি আমাকে নায়িকা বানানোর জন্য শহরে নিয়ে আসে তারা সবাই রাজাকার। এই ছবি মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপটে তৈরি। এখানে কাজ করতে খুব ভালো লাগছে। আমার বিশ্বাস, দর্শকও ভালোভাবে গ্রহণ করবে। অন্যদিকে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু স্যারের ‘বায়ান্ন থেকে একাত্তর’ ছবির কাজও শেষের দিকে। হয়তো এ বছর ছবিটি আলোর মুখ দেখবে।
জাগো নিউজ : নতুন করে একটি ছবির আইটেম গানে নাচবেন বলে শোনা যাচ্ছে। এর কাজ কবে থেকে শুরু হবে?
মুনমুন : ঠিকই শুনেছেন। মিনহাজ অভি পরিচালিত ‘মেঘকন্যা’ চলচ্চিত্রের একটি আইটেম গানের পারফর্ম করবো আমি। গতকালই (মঙ্গলবার) এ বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। তাছাড়া ছবির পরিচালক আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সে আমার জন্য ভালো একটি কাজের অফার করেছে। এই গানের কনসেপ্টটি একেবারে ভিন্ন ঘরানার। যেটা এর আগে হয়নি আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে। আরো একটা মজার একটা বিষয় হচ্ছে এই গানে আমার সাথে নাচবেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস। বান্দরবান এ ছবির গানে চিত্রায়নের প্রাথমিক কথা হয়েছে। আমি জেনেছি ‘মুসাফির, মুসাফির আমরা সবাই মুসাফির’ শিরোনামের এই আইটেম গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল। শওকত আলী ইমনের সংগীতায়োজনে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন পুলক, রিদ্র ও দিনাত জাহান মুন্নী।
জাগো নিউজ : চলচ্চিত্রে আবারো নিয়মিত হচ্ছেন তবে.....
মুনমুন : দেখুন, একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার স্বপ্ন নিয়েই আমি এই অঙ্গনে পা রেখেছিলাম। সাফল্যও পেয়েছিলাম। তারপর তো অনেক কিছুই ঘটে গেল। চলে গেলাম। আবারো ভাবছি নতুন করে শুরু করব। সবাই যদি সাহায্য করেন, আমার যারা সহকর্মী ছিলেন তারা এখনো যদি আমাকে আগের মতো করে গ্রহণ করেন এবং সবশেষে দর্শক যদি চায় আমি আবারো চলচ্চিত্রের ব্যস্ত মানুষ হয়ে উঠতে চাই।
জাগো নিউজ : কেমন চরিত্র আর ছবিকে প্রাধান্য দিবেন?
মুনমুন : এখন ডিজিটাল ফর্মেটে অনেক ভালো ছবি নির্মাণ হচ্ছে। নতুন অনেকেই কাজ করছে যারা খুব মেধাবী। আমি তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। তবে ইচ্ছে আছে ভিন্ন কিছু চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন করা। চিরদিন মানুষ আমাকে মনে রাখবে এমন কিছু চরিত্র চাই। গৎবাধা প্রেমিকা বা নায়িকা বাইরে গিয়ে সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে এমন কিছু চাই। রোমান্টিক কাজ অনেক হয়েছে, অ্যাকশান কাজও তো কম করিনি।
জাগো নিউজ : আপনার পরিবার নিয়ে কিছু বলুন.....
মুনমুন : স্বামী, দুই ছেলে যশ এবং প্রেমকে নিয়ে আমার সুখের সংসার। ছেলেরা স্কুলে পড়ছে।
জাগো নিউজ : আপনাকে প্রত্যাবর্তনে অভিনন্দন.....
মুনমুন : জাগো নিউজকেও ধন্যবাদ।
এনই/এলএ/পিআর