শ্যামাসুন্দরী খাল পুনরুদ্ধারে কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করতে নির্দেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:০৬ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রংপুরের শ্যামাসুন্দরী খাল পুনরুদ্ধার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায় পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে রংপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি), রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, রংপুর পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালককে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সঙ্গে সঙ্গে রুলও জারি করা হয়েছে। রুলে রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শ্যামাসুন্দরী খাল দূষণ ও দখল থেকে রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা সংবিধান ও প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন হওয়ায় কেন তা অসাংবিধানিক, বেআইনি এবং বিধিবহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সিএস জরিপ ও মূলপ্রবাহ অনুযায়ী উল্লেখিত খালের সীমানা নির্ধারণের, স্থানীয় বাসিন্দাদের চাষাবাদ ও মৎস্য শিকারের অধিকার সুরক্ষায় এবং তাদের জীবন ও জীবিকার মান উন্নয়ন করতে খাল থেকে দখলদার উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ করে খালটি পুনরুদ্ধারের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে যথাযথ সংরক্ষণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পক্ষে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। আদালতে আজ বেলা’র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট তৌহিদুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।

রংপুরের কেল্লাবন্দ এলাকায় শ্যামাসুন্দরী (স্ক্রাইন) খাল নামক একটি ঐতিহ্যবাহী খাল রয়েছে, এর আয়তন প্রায় ১৬ বর্গকিলোমিটার (৪১.৩৯৭১ একর)। খালটি রংপুর সদর উপজেলার কেল্লাবন্দ মৌজায় ঘাঘট নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে নগরীর রঘুনাথ, ভগী, রাধাবল্লভ, আলমনগর, কামালকাছনা, মাহিগঞ্জ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মাহিগঞ্জ রেলব্রিজের পাশে খোকসা ঘাঘট নদীতে পতিত হয়ে পুনরায় ঘাঘট নদীতে মিলিত হয়েছে। এ খাল দখল করে গড়ে উঠেছে দোকান, ঘর-বাড়িসহ নানা অবৈধ স্থাপনা। নির্মিত এ স্থাপনার জন্য খাল সংকুচিত হয়ে পানি প্রবাহের মূলধারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দখলের পাশাপাশি দূষণেও জর্জরিত এ খাল।

খালটির বিভিন্ন স্থানে ড্রেনের মাধ্যমে নিষ্কাশিত তরল বর্জ্য, প্লাস্টিক, পলিথিন, পয়োবর্জ্য, গৃহস্থালি বর্জ্য ফেলায় খালের পানি দূষিত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে খালটি প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে একটি পচা ডোবায় পরিণত হয়েছে। হারিয়ে গেছে মাছসহ জলজ প্রাণী এবং পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছে খাল নির্ভর কৃষক ও মৎস্যজীবীরা। শহরের পানি নিষ্কাশনে অন্যতম প্রধান মাধ্যম শ্যামাসুন্দরী খাল দখল ও দূষণ থেকে রক্ষায় বেলা এ রিট দায়ের করেন।

মামলার বিবাদীরা হলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, রংপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, রংপুর পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক এবং রংপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

এফএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।