বিএনপিকর্মীকে হত্যাচেষ্টা: শেখ হাসিনাসহ ৯৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৭ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০২৫
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ ফাইল ছবি

মুশফিকুর রহমান আবির (২৮) নামে এক বিএনপিকর্মীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে এ মামলা করেন ভুক্তভোগী মুশফিকুর রহমান আবির।

আদালত পল্টন থানাকে মামলার এজাহার গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পেশকার শিশির হাওলাদার।

মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মন্ত্রী হাসান মাহমুদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার প্রমুখ।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী প্রচারণা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের পক্ষ থেকে কলাবাগান এলাকায় প্রচারণা চলতে থাকে। মামলার বাদী প্রচারণা শেষে বাসায় ফেরার পথে কলাবাগান লেক সার্কাস ১নং রোডের মাথা থেকে আসামিরা বাদীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে মারধর করলে বাদী বেহুশ হয়ে পড়েন। এরপর বাদীকে হাজারীবাগের একটি ট্যানারির গোডাউনে আটকে রাখে মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর বাদীর পিতার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে পরদিন ৫ ডিসেম্বর সকালে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে বাদী জানতে পারেন তারা ছিল মেয়র তাপসের সন্ত্রাসী বাহিনী।

মামলার অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, বিএনপি আয়োজিত সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর সকাল থেকেই নয়াপল্টন স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠতে থাকে এবং সেখানে বাদী যোগ দেন। সমাবেশকে পণ্ড করতে ওইদিন হঠাৎ হামলা শুরু করে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও অন্যন্য সহযোগীরা। সমাবেশ স্থলে সরাসরি গুলি, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ শুরু হয়। সাধারণ নেতাকর্মীরা দিশেহারা হয়ে ছোটাছুটি শুরু করেন। বাদী সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে একই বছরের ৭ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে কলাবাগানে নিজ বাসায় ফেরেন।

একদিন পর স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বোচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের কর্মীরা বাদীর বাসায় ভাঙচুর, লুটপাট করেন এবং তাকে নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে বাদী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফেরার পর বাদী নিজেকে কলাবাগান থানার হাজতখানায় দেখতে পান। সেদিন রাতেই বাদীর বাবার সঙ্গে তখনকার দায়িত্বরত ওসি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কথা বলেন এবং বাদীর বাবার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি ও নানান হুমকি দেন। পরদিন কোর্টে চালান করার পর রিমান্ড চাইলে সার্বিক দিক বিবেচনায় আদালত তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। পরবর্তীতে দীর্ঘ ২২ দিন অসুস্থ শরীরে জেল খেটে জামিন পান বাদী।

এমআইএন/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।