ট্রাইব্যুনালে চিকিৎসকের জবানবন্দি

পঙ্গু হাসপাতালে ১৭ জনের এক পা, তিনজনের এক হাত কেটে ফেলা হয়

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫৮ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসা নিতে আসা আহত ১৭ জনের একটি করে পা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে ফেলতে হয়েছিল। আর একটি করে হাত কেটে ফেলতে হয়েছিল তিনজনের। সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানান হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সিরাজুস সালেহীন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) জবাববন্দি দেন চিকিৎসক মোহাম্মদ সিরাজুস সালেহীন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এই জবানবন্দি দেন তিনি। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

জবানবন্দিতে সিরাজুস সালেহীন বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘর্ষে গুরুতর আহত অবস্থায় পঙ্গু হাসপাতালে আনা ব্যক্তিদের মধ্যে গত বছরের ১৯ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত আটজন মারা যান। এর মধ্যে দুজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। বাকি ছয়জন অস্ত্রোপচারের পর মারা যান। এ ছাড়া অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনজন রোগীর একটি করে হাত এবং ১৭ জনের একটি করে পা কেটে ফেলতে হয়েছিল।

৪১তম সাক্ষী হিসেবে তিনি বলেন, আমি ২০২৪ সালের ১২ জুন এই পদে যোগ দিই এবং ১৯ জুলাই আমার ডিউটি না থাকায় বাসায় ছিলাম। সেদিন বিকেলে হাসপাতালের পরিচালক আমাকে জানালেন অনেক আহত রোগী হাসপাতালে এসেছে। আমাকে দ্রুত হাসাপাতালে আসতে বলা হয়। হাসপাতালে ইমার্জেন্সি বিভাগে গিয়ে দেখি অনেক আহত রোগী। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলিবিদ্ধ ছিল। রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত রোগী। তাদের কেউ কেউ রিকশাচালক, ভ্যানচালক এবং পথচারীও ছিল। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাই এবং সেখানে তাদের অস্ত্রোপচার করা হয়।

তিনি জানান, এরূপ আহত রোগীরা ৪ আগস্ট পর্যন্ত এসেছে। আমাদের হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে গত বছরের ১৯ জুলাই হতে ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৮ জন রোগী মারা যায়। যাদের মধ্যে দুইজন রোগীকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। বাকি ৬ জন অপারেশনের পর মারা যায়। অস্ত্রোপচার করে ৩ জনের একটি করে হাত এবং ১৭ জনের একটি করে পা কেটে ফেলা হয়।

এফএইচ/এমএমকে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।