ধর্ষণ-হত্যা মামলায় শুকুর আলীর ফাঁসি কার্যকর প্রক্রিয়া স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৪১ পিএম, ০৭ নভেম্বর ২০২১
ফাইল ছবি

২০০৪ সালে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগরে সাবিনা (১৩) নামে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আসামি শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। পরবর্তীতে শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল বিভাগ আদেশ দেন। ওই আদেশের রিভিউ আবেদনের প্রেক্ষাপটে শুকুর আলীর ফাঁসি কার্যকর প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত।

রোববার (৭ নভেম্বর) আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন। আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হেলাল উদ্দিন মোল্লা। তিনি নিজে বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।

আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হেলাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্রে আমরা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ নিয়ে আজ আপিল আবেদন করেছিলাম। ওই আবেদন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি স্থগিত হলো। এ বিষয়ে করা রিভিউ আবেদন ১৬ নভেম্বর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি হবে।

২০০৪ সালে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগরে সাবিনা (১৩) নামে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে করা মামলার আসামি শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়। গত ১৮ আগস্ট এক রায়ে ওই মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে অন্য তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে ওইদিন আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন এস এম শাহজাহান ও ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ রাতে দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামের আব্দুল মালেক ঝনুর মেয়ে সাবিনা (১৩) প্রতিবেশীর বাড়িতে টেলিভিশন দেখে বাড়ি ফেরার পথে অপহৃত হয়। এরপর লালনগর ধরমগাড়ী মাঠের একটি তামাক ক্ষেতে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ শেষে তাকে হত্যা করেন আসামিরা।

পরদিন সাবিনার বাবা আব্দুল মালেক ঝনু বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলার বিচার শেষে ২০০৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর হোসেন পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।

আসামি পাঁচজন হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামের খয়ের আলীর ছেলে শুকুর আলী, আব্দুল গনির ছেলে কামু ওরফে কামরুল, পিজার উদ্দিনের ছেলে নুরুদ্দিন সেন্টু, আবু তালেবের ছেলে আজানুর রহমান ও সিরাজুল প্রামাণিকের ছেলে মামুন হোসেন।

পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন। এর মধ্যে আসামি কামু ওরফে কামরুল মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে বাকি আসামিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এরপর আসামিরা আপিল আবেদন করেন।

ওই আপিলের শুনানি নিয়ে গত ১৮ আগস্ট রায়ে আপিল বিভাগ শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। অন্য তিন আসামি- নুরুদ্দিন সেন্টু, আজানুর রহমান ও মামুন হোসেনের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এছাড়াও তাদের কনডেম সেল থেকে স্বাভাবিক সেলে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন আদালত।

এফএইচ/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।