সাবেক এমপি আউয়ালসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

রাজধানীর পল্লবীতে প্রকাশ্যে সন্তানের সামনে শাহীন উদ্দিন (৩৩) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার মামলায় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এমএ আউয়ালসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পল্লবী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুর রফ জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আগামী বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মামলাটির অভিযোগপত্র গঠন শুনানির দিন ধার্য তারিখ রয়েছে।

মামলার চার্জভুক্ত অপর আসামিরা হলেন- সুমন ব্যাপারী, টিটু, কিবরিয়া, মুরাদ হোসেন, আবু তাহের, ইব্রাহিম সুমন, রকি তালুকদার, শফিকুল ইসলাম, তুহিন মিয়া, হারুন অর রশীদ, তারিকুল ইসলাম, নুর মোহাম্মদ, হাসান ও ইকবাল হোসেন। সুমন ও শফিকুল ছাড়া বাকি ১৩ আসামি কারাগারে। তাদের মধ্যে নয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত বছরের ১৬ মে বিকেল চারটায় জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধের বিষয়ে মীমাংসার কথা বলে ভিকটিম শাহীন উদ্দিনকে পল্লবী থানার ডি ব্লকের একটি গ্যারেজের ভেতর নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়। প্রকাশ্য দিবালোকে লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৭ মে পল্লবী থানায় নিহতের মা আকলিমা বেগম একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার এজাহারে আকলিমা বেগম উল্লেখ করেন, গত ১৬ মে বিকেল চারটার দিকে সুমন ও টিটু নামের দুই যুবক শাহীন উদ্দিনকে জমির বিরোধ মেটানো হবে জানিয়ে ফোন করে ডেকে নেন। শাহীন উদ্দিন মোটরসাইকেলে পল্লবীর ডি-ব্লকের ৩১ নম্বর সড়কের ৪০ নম্বর বাসার সামনে গেলে সুমন ও টিটুসহ ১৪-১৫ জন মিলে তাকে টেনে-হিঁচড়ে ওই বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে যায়। এসময় শাহীন উদ্দিনের ছয় বছরের ছেলে মাশরাফি গেটের বাইরে ছিল। গ্যারেজে ঢুকিয়ে শাহীনকে চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। এরপর তাকে ওই গ্যারেজ থেকে বের করে ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে আবার কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

নিহতের মায়ের অভিযোগ, পল্লবীর সেকশন-১২ বুড়িরটেকের আলীনগর আবাসিক এলাকার হ্যাভেলি প্রোপার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেডের এমডি এবং লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি এম এ আউয়ালের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাড়া করা স্থানীয় সন্ত্রাসীরা শাহীন উদ্দিনকে হত্যা করেছে। আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর জমি জবরদখলে বাধা দেয়ায় তাকে খুন করা হয়। নিহত শাহীন উদ্দিনের বাসা পল্লবীর ডি-ব্লকে।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি এম এ আউয়ালকে। অন্য আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সুমন, মো. আবু তাহের, মুরাদ, মানিক, মনির, শফিক, টিটু, কামরুল, কিবরিয়া, দিপু, আবদুর রাজ্জাক, মরন আলী, লিটন, আবুল, বাইট্যা বাবু, বড় শফিক, কালু ওরফে কালা বাবু, নাটা সুমন ও ইয়াবা বাবু। আসামিরা সবাই পল্লবী থানা এলাকার বাসিন্দা।

সন্দেহভাজন অভিযুক্তদের মধ্যে মনির ও মানিক র্যাব-পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।

জেএ/এমকেআর/এএসএম