বঙ্গবন্ধু হত্যা

সশস্ত্র প্রতিবাদকারীদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও নিরাপত্তায় রুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৬ পিএম, ০৭ আগস্ট ২০২২
ফাইল ছবি

১৯৭৫ সালে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার সশস্ত্র প্রতিরোধযোদ্ধাদের চিহ্নিত করে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পুনর্বাসনে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার বাকির উদ্দিন ভূইয়া জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (৭ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি খসরুজ্জামান ও বিচারপতি ইকবাল কবীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. আবু হানিফ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরবর্তীকালে সশস্ত্র প্রতিরোধযোদ্ধাদের চিহ্নিত করে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পুনর্বাসনের নির্দেশনা চেয়ে গত ১ আগস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ সংক্রান্ত রিট আবেদন করা হয়। নেত্রকোনার আনিস খোন্দকার, সাইদুল কাদির, সুনামগঞ্জের ইউসুফ আলী, পরিমল সরকার ও গাজীপুরের স্বপন চন্দ এ রিট দায়ের করেন।

রিটে জাতির পিতার হত্যার সশস্ত্র প্রতিবাদকারী পাঁচজনসহ সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন আর্জি জানানো হয়।

রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট বাকির উদ্দিন ভুইয়া বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পর বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়। তৎকালীন সামরিক সরকার মিছিল মিটিং সব বন্ধ করে দেয়। তখন মানুষের মনে একটা ভীতিকর অবস্থা তৈরি হয়। ওইদিনই নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, খুলনা, যশোর, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ এবং ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ হয়।

পরবর্তীসময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে জাতীয় মুক্তি বাহিনী ও চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে জাতীয় মুজিব বাহিনী নামে দুটি সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনী গঠিত হয়। তখন কয়েক হাজার বঙ্গবন্ধু-ভক্ত ছাত্র-তরুণ-যুবক এ দুই বাহিনীতে যোগদান করেন। তারা ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহে লিপ্ত হন। তাদের প্রতিরোধের কারণে তৎকালীন সরকার প্রতিরোধযোদ্ধাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন শুরু করে।

তৎকালীন সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার জাতীয় মুক্তি বাহিনী ও জাতীয় মুজিব বাহিনীকে নানাভাবে সহযোগিতা দেয়। কিন্তু ১৯৭৭ সালে মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় মোর্চা সরকার’ জাতীয় মুক্তি বাহিনী ও জাতীয় মুজিব বাহিনীর সদস্যদের বাংলাদেশের বিডিআরের কাছে হস্তান্তর করলে তাদের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্দিন। জেল, জুলুম ও নির্যাতন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ৪৭ বছর পার হলেও এখনও সেই প্রতিরোধযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। প্রতিরোধযোদ্ধাদের অনেকেই চরম কষ্ট-অবহেলায় জীবনযাপন করছেন।

সেইসব অকুতোভয় প্রতিরোধযোদ্ধাদের চিহ্নিত করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পুর্নবাসনসহ নিরাপত্তা বিধানে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আজ রুল জারি করেন আদালত।

এফএইচ/ইএ/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।