সাংবাদিক আফতাব হত্যা
রায়ে সন্তুষ্ট পরিবার, দ্রুত কার্যকরের দাবি মেয়ের

একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তার মেয়ে আফরোজা আহমেদ। একইসঙ্গে রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১২ অক্টোবর) রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এ মামলায় বিচারিক আদালতে দেওয়া পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং দণ্ডিত এক আসামির সাত বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারানুম রাবেয়া মিতি। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এস এম শাহজাহান ও হেলাল উদ্দিন মোল্লা। পলাতক আসামির পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী এস এম শফিকুল ইসলাম।
রায়ের পর আফতাব আহমেদের মেয়ে আফরোজা আহমেদ বলেন, রায়টা আমরা পেলাম। আদালত যে রায় দিয়েছেন, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। হাইকোর্ট যে রায় দিলেন, এটা যেন ভবিষ্যতে বহাল থাকে এবং কার্যকর হয়।
২০১৭ সালের ২৮ মার্চ প্রবীণ সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচ আসামি হলেন বিল্লাল হোসেন কিসলু, হাবিব হাওলাদার, রাজু মুন্সি, রাসেল ও আফতাব আহমেদের গাড়িচালক হুমায়ুন কবির মোল্লা। অন্য আসামি সবুজ খানকে সাত বছর কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
রাজু মুন্সি ও রাসেল পলাতক। পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর রামপুরায় নিজ বাসা থেকে আফতাব আহমেদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হত্যার দায় স্বীকার করে হুমায়ুন কবির, হাবিব হাওলাদার ও বিল্লাল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওই জবানবন্দিতে তারা স্বীকার করেন, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আফতাব আহমেদের বাসায় ডাকাতি করার সময় তাকে গামছা দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধে তারা হত্যা করেন।
আসামি বিল্লাল হোসেন কিসলু আফতাব আহমেদের বাসার ড্রয়ার ভেঙে ৭২ হাজার টাকা লুট করেন। পরে তারা বৌবাজার নামক একটি জায়গায় এ টাকা ভাগাভাগি করে নেন।
৬৯ বছর বয়সী সাংবাদিক আফতাব আহমেদ দৈনিক ইত্তেফাকের প্রবীণ ফটোসাংবাদিক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ও পরবর্তীসময়ে অনেক দুর্লভ ছবি তোলেন। আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য ২০০৬ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।
এফএইচ/এএএইচ/জিকেএস