চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বিভাগীয় প্রার্থীদের আবেদনে বাধা কাটলো

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:২০ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০২৩
ফাইল ছবি

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির ১২ নম্বর শর্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে গত ১৪ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্রের কার্যকারিতাও ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপশি চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে এমপিওভুক্ত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদনের সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এ আদেশের ফলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করতে আর কোনো বাধা রইলো না। তাদের আবেদনের পথ সুগম হলো বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।

আরও পড়ুন: যাচাই-বাছাইয়ে আটকা শিক্ষক নিয়োগ, অনিশ্চয়তায় গণবিজ্ঞপ্তি

পাশাপাশি রিটকারীদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদনের সুযোগ বাতিল করা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। এছাড়াও জনবল কাঠামো নীতিমালা অনুযায়ী রিটকারীদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি-২০২২ এ আবেদন করার সুযোগ কেন দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্টদে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

পৃথক দুটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (২২ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহ’র সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মো. শরিফুল ইসলাম। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মোহাম্মদ রাসেল চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার জি এম গোলাম সারোয়ার পায়েল।

আরও পড়ুন: সারাদেশে ৬০ হাজার শিক্ষক পদ শূন্য

আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে অনুসরণীয় পদ্ধতি’ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রের ৭নং ক্রমিকে উল্লেখ আছে যে, ‘কর্মরত কোনো শিক্ষক যদি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেতে আবেদন করেন তবে তাকেও অপরাপর আবেদনকারীদের একই ধরনের মেধাক্রমের ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হবে’। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা- ২০১৮ (২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত সংশোধিত) -এর ধারা ১২ এবং বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা- ২০১৮ (২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত সংশোধিত)- এর ধারা ২৩.১ এ উল্লেখ আছে যে, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে সমপদে বা উচ্চতর পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন’।

এতে বলা হয়, আগের প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র ও দায়মুক্তি প্রাপ্তি সাপেক্ষে নতুন প্রতিষ্ঠানে এমপিও প্রাপ্য হবেন। কর্মরত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করার সুযোগ আছে। কিন্তু গত বছরের ১৪ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অপর একটি পরিপত্র জারি করে। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর পরিপত্রের ৭নং ক্রমিক সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করে এবং পরে বিগত ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর এনটিআরসিএ ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যার ১২নং শর্তে এই ১৪ নভেম্বরের পরিপত্রের বিষয় উল্লেখ করে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করার সুযোগ বাতিল করা হয়।

আরও পড়ুন: চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি, তথ্য গোপন করে আবেদন থেকে হুঁশিয়ারি

ওই ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের ওপর সংক্ষুব্ধ হয়ে ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা রিট দায়ের করেন। মাহবুব আলম, আনিসুর রহমান, মো. উজ্জল আলী, মো. সাইদুল ইসলাম, মো. ফজলুল হক, শাকিলা আক্তার, মো. শামিম হোসেনসহ বিভিন্ন জেলার মোট ৮৩ জন ইনডেক্সধারী শিক্ষক রিট আবেদনটি দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন হাইকোর্ট।

আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, আজকের আদেশের ফলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করতে আর কোনো বাধা রইলো না। তাদের আবেদনের পথ সুগম হলো।

এফএইচ/কেএসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।