মানবতাবিরোধী অপরাধ

গাইবান্ধার ৯ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক ২৭ জুন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫৬ পিএম, ২৫ মে ২০২৩
ফাইল ছবি

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মোফাজ্জল হক প্রধানসহ ৯ আসামির বিরুদ্ধে সাফাই সাক্ষীর জবানবিন্দ শেষ করা হয়েছে। এখন মামলায় যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের জন্য আগামী ২৭ জুন পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন— বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।

বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী।

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী ও প্রসিকিউটর ঋষিকেশ সাহা। আর আসামির পক্ষে অ্যাডভোকেট গাজী এমএইচ তামিম ও আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।

প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী জানান, এর আগে তদন্ত কর্মকর্তাসহ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১৩ জনের সাক্ষ্য শেষ করা হয়েছে। এখন ডিফেন্সপক্ষ আসামির সাফাই সাক্ষী উপস্থাপন করার পর যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ঠিক করেছেন আদালত।

এর আগে ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মোফাজ্জল হক প্রধানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

আসামিদের মধ্যে কারাগারে আছেন— মো. মোফাজ্জল হক প্রধান ওরফে মোফা (৮২), মো. সেকেন্দার আলী (৬৬), মো. আব্দুল করিম (৬৩), মো. ইসমাইল হোসেন (৭০), মো. আকরাম প্রধান (৬৮) ও মো. হাফিজার রহমান (৬৪)। পলাতক রয়েছেন— মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন ওরফে মো. শরফ উদ্দিন খান (৬৪), মো. সামছুল ইসলাম খান (৬৪) ও মো. আব্দুল মান্নান (৬৪)।

ওইদিন রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত তদন্ত সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনটি ভলিউমে ১৮১ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক মো. আব্দুল হান্নান খান।

আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণসহ মোট চারটি অভিযোগ তদন্ত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ এ মামলার তদন্ত কাজ শেষ হয়। তদন্তে মোট ২৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১০ মে থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিরা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার কাটাবাড়ীর ইউনিয়নের ৭ ও ১০ নম্বর কাটাবাড়ী গ্রাম এবং মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের শ্রীপতিপুর ও বালুয়া গ্রামে অপরাধ সংগঠন করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে চারটি অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগগুলো হলো— ১৯৭১ সালের ১০ মে আসামিরা কাটাবাড়ী ইউনিয়নের ৭ নম্বর কাটাবাড়ী গ্রামের শহীদ জিয়া মণ্ডল, শহীদ মনা মণ্ডল ও শহীদ ওমেছ মণ্ডলকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, জবাই করে হত্যা এবং লুণ্ঠন চালান। এরপর শহীদ জিয়া মণ্ডলের ছেলে ভিকটিম আব্দুর রশীদ ও আব্দুল জোব্বার এবং কাঠালবাড়ী উত্তরপাড়ার আজিজার রহমানকে আটক, অপহরণ ও নির্যাতন করেন।

দ্বিতীয় অভিযোগ— ১৯৭১ সালের ২২ জুলাই আসামিরা গাইবান্ধা বালুয়া গ্রামের মো. ইউনুস আলী আকন্দের বাড়িতে তার স্ত্রীসহ মোট দুইজনকে ধর্ষণ করেন।

তৃতীয় অভিযোগ— ১৯৭১ সালের ৩ আগস্ট রাতে আসামিরা গোবিন্দগঞ্জের শ্রীপতিপুর গ্রামের শহীদ আব্দুল কাদের সরকার, শহীদ আব্দুস সোবহান আকন্দ ও শহীদ এমাদ উদ্দিন আকন্দকে আটক, অপহরণ, হত্যা ও শ্রীপতিপুর গ্রামের একজনকে ধর্ষণ করেন।

চতুর্থ অভিযোগ— ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর আসামিরা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ১০ নম্বর কাটাবাড়ী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ দেলোয়ার হোসেন ওরফে দুলাল এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শাহজালাল মিয়া ওরফে ঝালু মিয়াকে আটক, অপহরণ, হত্যা ও লুণ্ঠন করেন।

এফএইচ/এমএএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।