পেইন্টিংয়ে সাজান আপনার ঘর

নিজের রুচিবোধ আর শৈল্পিক গুণের ব্যবহার করে ঘর সাজাতে আমরা সবাই পছন্দ করি। মনের মতো আসবাব, পর্দা, কুশন-কাভার, বাহারি শিল্প-সামগ্রী, পেইন্টিং, গাছ দিয়ে ঘর সাজানো হয়ে থাকে। ঘরের প্রধান অংশ দেয়াল ও ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বেশ ভূমিকা রাখে। দেয়ালে একটু রুচিশীল রঙের ছোঁয়া পাল্টে দিতে পারে পুরো ঘরের আবহ। বসার ঘর, শোবার ঘরের দেয়ালগুলো পেইন্টিং দিয়ে সাজানো যায়। এতে আপনার মননশীল মন বিকশিত হবে পাশাপাশি ঘরের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পাবে।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কেমন করে সাজাবেন আপনার পছন্দের ঘরটি-
রুমের সঙ্গে মানানসই হতে হবে
ঘরের ইন্টেরিয়র ডিজাইনের সঙ্গে পেইন্টিংস মানানসই কি না, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঘর বড় হলে বড় আকারের শিল্পকর্ম আপনার পছন্দকে জাহির করবে সুন্দরভাবে। তবে ছোট ঘরের জন্য অতিরিক্ত বড় পেইন্টিং না কেনা ভালো। ছোট পেইন্টিং অনেক সময় নজর এড়িয়ে যায়। তাই বাজেটে ঘাটতি থাকলে মাঝারি আকারের আর্টপিস কিনে ঘর সাজাতে পারেন।
ফ্রেমে বাধা শিল্পকর্ম
পেইন্টিংয়ের ব্যবহার দেয়ালকে রঙিন করে তোলে। একটি ভালো ও সুন্দর পেইন্টিং ঘরের চেহারা পাল্টে দিতে বাধ্য। আপনি যদি ভালো আঁকাআঁকি পারেন তবে কয়েকটি সুন্দর পেইন্টিং বানিয়ে ফ্রেমে বাধাই করে দেয়ালে ঝুলিয়ে দিতে পারেন। শিল্পকর্ম দিয়ে সাজানোর সময় ফ্রেমটা যেন সুন্দর হয় সেদিকে খেযাল রাখতে হবে। বসার ঘরের দেয়ালে ঝোলানো চমৎকার একটি শিল্পকর্ম বাড়িয়ে দিতে পারে ঘরের সৌন্দর্য।
ঘর অনুযায়ী চিত্রকর্ম
বারান্দায় টাঙানো চিত্রকর্ম হতে পারে বিভিন্ন ফুল বা প্রাকৃতিক দৃশ্য। এমন চিত্রই বারান্দার সঙ্গে মানানসই হবে। বসার ঘরে একটি একক পেইন্টিং নিস্তেজ এবং প্রাণহীন কক্ষটিকে রঙিন ঘরে পরিণত করতে পারে। গুস্তাভ ক্লিম্ট, পাবলো পিকাসো বা সালভাদোর ডালির চিত্রগুলো ইদানীং খুব জনপ্রিয়। চাইলে বসার ঘরে অনায়াসে ব্যবহার করতে পারেন।
খাবার ঘরের দেয়ালের পেন্টিংয়ের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল রং বেছে নিন। ঘরের আসবাব ও দেয়ালের রঙের সঙ্গে চিত্রকর্ম বাঁধাই করা ফ্রেমের রঙের বিপরীত রং রাখতে পারেন। ঘরের নান্দনিকতার জন্য কর্নারগুলো সাজিয়ে আপনি ঘরের চেহরা পাল্টে ফেলতে পারেন। অন্দরমহলের কর্নারে পছন্দসই চিত্রকর্ম বা দেয়াল আর্ট টাঙিয়ে দিন। আবার অনেকগুলো চিত্রকর্ম একসঙ্গে কর্নারে রাখলে দেখতে ভালো লাগবে, সেই সঙ্গে ঘরের সৌন্দর্যও বাড়বে। শোবার ঘরের জন্য সবচেয়ে ভালো হয় হালকা রঙের পেইন্টিং। এই পেইন্টিং শোবার ঘরে স্নিগ্ধ আবেশ তৈরি করবে। শিশুর ঘরের চিত্রকর্ম রঙিন হলে বেশি মানানসই। কার্টুনের ছবিসংবলিত কোনো পেইন্টিং, করিডরের দেয়ালজুড়ে রাখলে বেশ ভালো লাগবে। তবে শিশুর পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দিতে হবে।
পুরোনো আভিজাত্যে আধুনিকভাব
মোঘল, আরকান, পাল বংশের রাজা-বাদশাদের রাজপ্রাসাদে অসাধারণ কারুশিল্পের পাশাপাশি ব্যবহার করা হতো এই আয়নার পেইন্টিংস। পেইন্টিং বা আয়নাগুলোর নকশায় খোদাই করা কাঠের ফ্রেমগুলো অতীতের,তবে ডিজাইনাররা বিশ্বাস করেন বর্তমানে একটি আধুনিক ফ্যাশনেবল ক্লাসিক গৃহসজ্জা উপকরণ। দারুন সব ফ্রেমে আঁকা ছবির পাশাপাশি ব্যবহার করুন ফ্রেমে বাঁধানো আয়না। দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখুন ঘরটি আকর্ষণীয় লাগবে।
সৃজনশীল পেইন্টিং
ঘর হোক ছোট বা বড় সেই ঘরটিকে সুন্দরভাবে সাজাতে সবারই ভালো লাগে। আপনি যদি সৃজনশীলতার ধারণা রাখেন তাহলে দেয়াল জন্য আর্টওয়ার্ক নির্বাচন করুন। বিখ্যাত পেইন্টারের মূল কাজ সংগ্রহ করতে গেলে খরচ একটু বেশিই পড়বে। মনে রাখবেন, কেবল আপনার জন্যই শিল্পকর্মটি কিনছেন। ঘরের জন্য পেইন্টিং কেনার সময় খুব বেছে কেনাই ভালো।
দেয়ালে আঁকা পেইন্টিং
দেয়ালের নকশায় ভিন্নতা এনেই কিন্তু পাল্টে ফেলা যায় ঘরের চেহারা। ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে ঘরের দেয়ালে বিভিন্ন পেইন্ট আমাদের সৌখিনতা ভালোলাগার বিষয় ফুটিয়ে তোলে। ঘরকে করে রঙিন ও প্রাণবন্ত। ওয়াল প্রিন্টিং, ক্লিয়ার স্টিকার, ইলিউশন সব কিছুর পর এখন রংতুলি আঁচড়। অনেকেই দেয়ালে পেইন্ট করে ভিজ্যুয়াল ড্রামা সৃষ্টি করেন। প্লেইন পেইন্টিং, রাস্টিক পেইন্টিং, টেকচার পেইন্টিং, থ্রি ডি পেইন্টিং কিংবা প্যাটার্ন ঘরের সঙ্গে মানিয়ে করতে পারেন। সেক্ষেত্রে বেশ নাটকীয় আবহ আসতেই পারে বসার ঘরের ইন্টেরিয়রে। এতে করে ঘরে যোগ হয় নতুন এক মাত্রা।
সূত্র: হোমস গার্ডেন
এসএকেওয়াই/কেএসকে/জেআইএম