অ্যালঝাইমার্স নিয়ে কী বার্তা দিলো ‘সাইয়ারা’

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০০ পিএম, ০২ আগস্ট ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত বলিউড সিনেমা ‘সাইয়ারা’ অতি অল্প সময়েই বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে। নবাগত জুটি আহান পাণ্ডে ও অনিত পাড্ডের রসায়ন দেখতে প্রেক্ষাগৃহে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন দর্শকেরা। বিশেষ করে জেন-জি দর্শকদের মধ্যে ‘সাইয়ারা’ এখন ট্রেন্ডিং টপিক। প্রশংসায় ভাসছে সিনেমার গল্প এবং অভিনেতারা।

এই সিনেমাটিতে দেখানো হয়েছে মাত্র ২২ বছর বয়সেই নায়িকা অ্যালঝাইমার্স বা ভুলে যাওয়ার অসুখে আক্রান্ত হয়েছেন। সাধারণত এমনটা হয় না বললেই চলে। তবে কম বয়সে যে অ্যালঝাইমার্স হয় না, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ৩০ বছরের আগেও কেউ কেউ অ্যালঝাইমার্সে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই সিনেমাটিতে কম বয়সে অ্যালঝাইমার্স রোগটি নিয়ে সচেতন থাকতে বার্তা দিয়েছে।

অ্যালঝাইমার্স সাধারণত ৬০ থেকে ৮৫ বছর বয়সে মানুষের মাঝে হয়ে থাকে। পুরুষ বা নারী যে কেউ অ্যালঝাইমার্সে আক্রন্ত হতে পারে।

অ্যালঝাইমার্স কী?
অ্যালঝাইমার্স বা ডিমেনশিয়া হলো এমন একটি রোগ, যেখানে মস্তিষ্কের কোষ বা নিউরন ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে। এর জেরে চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা এবং মনে রাখার ক্ষমতা লোপ পেতে থাকে। এটি মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত রোগ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্রেনের আরও অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে।

অ্যালঝাইমার্স কেন হয়
অ্যালঝাইমার্স বংশগত বা জেনেটিক্স কারণে হতে পারে। এছাড়া মস্তিষ্কের নানা রোগ, শরীরে ভিটামিন বা খনিজ উপাদানের ঘাটতি, মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমে যাওয়া, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, অতীতের কোনো ট্রমা, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে হতে পারে।

এই রোগের লক্ষণ
> অ্যালঝাইমার্সের অন্যতম লক্ষণ হলো কোনো কিছু মনে রাখতে না পারা বা চিনতে না পারা।
> মনের ভাব প্রকাশ করতে গিয়ে সঠিক শব্দ খুঁজে না পাওয়া।
> একই প্রশ্ন বারবার জিজ্ঞাসা করা কিংবা একই কথা বহুবার বলা।
> নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস কোথায় রাখা হয়েছে, তা ভুলে যাওয়া বা এক স্থানে রেখে অন্যত্র খোঁজা।
> এছাড়া বারবার বাতি জ্বালানো, টিভি চালানো এবং সাধারণ হাটবাজারের হিসাবনিকাশ করতে না পারা।
> পরিচিতদের নাম ভুলে যাওয়া এবং পরিচিত স্থান চিনতে না পারা। রাস্তা হারিয়ে অন্যখানে চলে যাওয়া, বাড়ির রাস্তা খুঁজে না পাওয়া। বারবার রাস্তা ভুলে যাওয়া।
> সামাজিকভাবে নিজেকে গুটিয়ে ফেলা, ঘুমের সমস্যা, কিছু চুরি হয়ে গেছে বলে ধারণা করা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
> অতিরিক্ত উদ্বেগ, কখনো অতিরিক্ত রাগ বা ক্রুদ্ধ ভাব, মুড ও ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হওয়া।

অ্যালঝাইমার্সের চিকিৎসা কী?
অ্যালঝাইমার্স রোগ নিরাময়ের এখনো কোনো উপায় নেই। তবে চিকিৎসকেরা নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যাতে আচরণগত সমস্যাগুলো কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। নিয়মিত খেলেই রোগী দীর্ঘদিন ভালো থাকেন। এর মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবনমান উন্নত করা সম্ভব। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করতে হবে এবং যত্ন নিতে হবে। কারণ তারা নিজেদের যত্ন নিতেও ভুলে যান। কোনোভাবেই তাদের প্রতি অবহেলা করা যাবে না।

এই রোগ ঠেকাতে
স্বাস্থ্যকর খাবার ও জীবনযাপন পদ্ধতি অ্যালঝাইমার্স থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে নিয়মিত ব্যায়াম, সচল জীবনযাপন, ধুমপান বর্জন এবং চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত।

সূত্র : দ্য ইকোনমিক টাইমস, মায়ো ক্লিনিক

এসএকেওয়াই/কেএসকে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।