যেসব খাতে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াত পাবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০৯ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০২৫

সানজানা রহমান যুথী

কর রেয়াত বলতে বৈধ উপায়ে কর কমানো বা কর কম দেওয়াকে বোঝায়। আর বিনিয়োগ বা দান হলো কর রেয়াতের বৈধ উপায়।

প্রতি বছর জুলাই থেকে পরের বছরের জুন পর্যন্ত এই ১২ মাসের আয়ের ওপর কর বসে। এই সময়ের মধ্যে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াত পাওয়া যায়। কিন্তু অনেকেই জানেন না কোন কোন খাতে বিনিয়োগ করলে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি কর রেয়াত পাওয়া যাবে।

মূলত কর রেয়াতের বিনিয়োগ খাত অনেকগুলো। তবে এর মধ্যে জনপ্রিয় কিছু খাত রয়েছে। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক কর রেয়াতের কিছু জনপ্রিয় বিনিয়োগ খাত।

১. জীবন বীমা

সাধারণত মানুষের মৃত্যুজনিত ও জীবন সম্পর্কিত ঝুঁকি থাকলে ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য জীবন বীমা করা হয়। এ ক্ষেত্রে যে করদাতা নিজের নামে বীমা করেছেন এবং নিয়মিত প্রিমিয়াম দিচ্ছেন, তা বিনিয়োগের টাকা হিসেবে ধরে কর রেয়াতের সুবিধা নেওয়া যাবে। তবে এই সুবিধা শুধু জীবন বীমার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কোনো শিক্ষা বীমা, স্বাস্থ্য বীমা, বৃত্তি বীমা, পেশাগত কোনো বীমা বা ঝুঁকিগত দুর্ঘটনা বীমা এর আওতায় পড়বে না।

২. প্রভিডেন্ট ফান্ড

সাধারণত সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত পেশাজীবীরা অবসর গ্রহণ করলে পেনশন পান না। তাই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের চাকরি শেষে অর্থনৈতিকভাবে সুরক্ষার জন্য প্রভিডেন্ট ফান্ড তৈরি করা হয়েছে।

সাধারণত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের প্রতি মাসের বেতনের ৭ থেকে ১৫ শতাংশের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ তহবিলে জমা করা হয়। এর সঙ্গে নিয়োগকর্তাও সমপরিমাণ অর্থ ওই ব্যক্তির নামে তহবিলে জমা দেন। টাকা জমা রাখা এই তহবিলকেই বলা হয় প্রভিডেন্ট ফান্ড। প্রভিডেন্ট ফান্ডে এই জমা টাকার অর্জিত সুদের ওপর কর রেয়াতের সুবিধা রয়েছে।

৩. সঞ্চয়পত্র

বিনিয়োগের আরেকটি জনপ্রিয় খাত হলো সঞ্চয়পত্র। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কর রেয়াতের সুবিধা পাওয়া যায়। নিরাপদ সঞ্চয় ও মুনাফা বেশি থাকায় এ খাতে মানুষের বিনিয়োগের আগ্রহ বেশি থাকে।

এ ক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্র ইস্যু করে বাংলাদেশ সরকার। তাই মেয়াদ শেষে মুনাফাসহ বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে। পাশাপাশি কর রেয়াতের সুবিধাও পাওয়া যায়। যেমন, কারও আয় যদি ৮ লাখ টাকা হয়, এর মধ্যে তিনি যদি আয়ের ১০ শতাংশ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেন, তাহলে তিনি তার প্রদেয় করের ওপর সর্বোচ্চ ছাড় পাবেন।

৪. ডিপিএস

বিনিয়োগের অন্যতম সুপরিচিত খাত হলো ডিপিএস। আপনার টাকা ডিপিএসে রাখলে বিনিয়োগের কর রেয়াতের সুবিধা পাবেন। এ ক্ষেত্রে প্রতি মাসে ব্যাংকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে ভালো পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন, যার সম্পূর্ণটাই বিনিয়োগ ধরে নিয়ে কর রেয়াতের সুবিধা পাওয়া যাবে।

৫. ট্রেজারি বন্ড, শেয়ার

ট্রেজারি বন্ড ও শেয়ারের মাধ্যমেও কর রেয়াতের সুবিধা পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে সরকারি সিকিউরিটিজ ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করে এবং শেয়ারবাজারে টাকা দিয়ে যেমন মুনাফা পাওয়া যায়, তেমনি একে বিনিয়োগ খাত হিসেবে দেখিয়ে কর রেয়াতের সুবিধাও নেওয়া যায়।

এ ক্ষেত্রে ব্যাংক বা শেয়ারবাজার থেকে বাংলাদেশ সরকার ইস্যুকৃত ট্রেজারি বন্ড কিনতে হবে। ট্রেজারি বন্ডের ক্ষেত্রে কর রেয়াতের সর্বোচ্চ সীমা পাঁচ লাখ টাকা।

শেয়ারের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে হবে শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার কেনার ওপর। কেউ যদি গত বছরের শেয়ার বিক্রি করে আবার নতুন করে শেয়ার কেনেন, তাহলে এ বছর অতিরিক্ত যে টাকা বিনিয়োগ করা হবে, সেই নতুন বিনিয়োগকৃত টাকার ওপর কর রেয়াত পাওয়া যাবে। শেয়ারে বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এখানে কর রেয়াতের কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই।

সূত্র: বিবিসি

এএমপি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।