একটি নিখুঁত পরিবার কেন জরুরি

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:২২ পিএম, ১৮ জুলাই ২০২৫

পরিবার এমন একটি জায়গা; যেখানে বিপদে-আপদে, সুখে-দুঃখে সবাই একে অপরের পাশে থাকেন। ভালোবাসা আর পরিবার দুটোই জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানুষ পরিবারের সান্নিধ্যে থেকে নিজের এবং বাইরের পৃথিবী সম্পর্কে ধারণা পায়। পারিবারিক সম্পর্ককে দৃঢ় করতে বিশ্ব পরিবার দিবস আছে। তবে আপনি কি এটা জানেন, পারফেক্ট ফ্যামিলি ডে মানে নিখুঁত পরিবার দিবস বলতে একটি দিবস আছে।

নিখুঁত পরিবার দিবসের ইতিহাস
১৯৯৯ সালে পারফেক্ট ফ্যামিলি ডে বা নিখুঁত পরিবার দিবস শুরু হয়েছিল। পরিবারের নিকটতম সম্পর্কের দৃঢ়তার ওপর মনোযোগ দিতে দিবসটি চালু করা হয়েছিল। ২০০০ সালের গোড়ার দিকে পারফেক্ট ফ্যামিলি বা নিখুঁত পরিবার নিয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়তে শুরু করে। বিশেষ করে ওয়েবসাইট এবং কমিউনিটি পেজগুলোর কারণে। ২০০৬ সালের দিকে কিছু সংস্থা জনসচেতনতার জন্য দিবসটির প্রচারণা শুরু করে। এতে তাদের প্রচেষ্টা সফল হয়। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই দিনটি বিভিন্ন দেশের নজর কাড়ে। পরে ১৮ জুলাইকে নিখুঁত পরিবার দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

নিখুঁত পরিবার বলতে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং বোঝাপড়ার ভিত্তির ওপর একটি পরিবারকে প্রতিষ্ঠিত করাকে বোঝায়। সাধারণত পরিবার গঠনে বাবা-মা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শিশুর মানসিক, শারীরিক, সামাজিক বিকাশকে উৎসাহিত করতে নিখুঁত পরিবার প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। নিখুঁত পরিবার গঠনের মূল চাবিকাঠি অভিভাবকদের হাতে। পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে খাওয়া, আড্ডা দেওয়াসহ দৈনন্দিন ছোট ছোট পদক্ষেপ ও আচরণের মাধ্যমে পরিবারকে নিখুঁত ভাবে গঠন করা সম্ভব।

একটি নিখুঁত পরিবার কেন জরুরি

আসুন জানা যাক, একটি নিখুঁত পরিবার গঠন করতে কী কী করতে পারেন-

প্রতিদিন একসঙ্গে খাওয়া
প্রতিদিন একবেলা অন্তত পরিবারের সবাই একসঙ্গে খাবার খাওয়া। সাধারণত সকাল ও দুপুরে কর্মব্যস্ততার কারণে একসঙ্গে খেতে বসা সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে সন্ধ্যার নাস্তা কিংবা রাতের খাবার একসঙ্গে খেতে পারেন। সবার সময়সূচির সঙ্গে সমন্বয় করে খাওয়ার সময় নির্ধারণ করুন। এর ফলে পারিবারিক বন্ধন শক্তিশালী হয়ে নিখুঁত পরিবার গঠিত হবে।

বন্ধুর মতোই কথা বলুন
পরিবারের সদস্যের সঙ্গে কথা বলুন মন উজাড় করে। আপনার অনুভূতি ভাগ করে নিন তাদের সঙ্গে। প্রয়োজনের বাইরেও কথা বলুন। হাসি-আনন্দ ভাগ করে নিন। নৈমিত্তিক জীবনে মজার কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে কিংবা কোনো কারণে আপনি কষ্ট পেয়ে থাকলে সেটিও বলুন। এতে পরিবারের প্রতিটি সদস্য একে অপরের সম্পর্কে সব জানতে পারবেন এবং যে কোনো সমস্যায় এগিয়ে আসতে পারবেন।

একটি নিখুঁত পরিবার কেন জরুরি

একসঙ্গে সময় কাটানো
পরিবারের সদস্যরা মিলে একসঙ্গে সময় কাটান। সপ্তাহে একটা সময়ে সিনেমা দেখুন কিংবা লুডু ও ক্যারামের মতো ঘরোয়া গেম খেলুন। পরিবারে বয়স্কদের প্রতি বিশেষ নজর দিন। তাদের সঙ্গে সময় কাটান। পরিবারের ছোটদের সঙ্গে খেলাধুলা করুন। তাদের গল্প শোনান। পরিবারের সবার সঙ্গে কাটানো সময় মোবাইল ফোন বা অন্যান্য গ্যাজেট দূরে রাখুন। এতে সবার শারীরিক ও মানসিক উপস্থিতি নিশ্চিত হবে এবং সময়টা উপভোগ্য হয়ে উঠবে।

দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ান
পরিবারের কেউ বিপদে পড়লে সবাই সাহায্য করতে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। পরিবারের ওপর ভরসা রাখুন। রোগে-শোকে আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন হলে সবাই সবার প্রতি খেয়াল রাখুন। সংবেদনশীল যে কোনো বিষয়ে জানতে চাওয়ার সময় শব্দচয়নে সতর্ক থাকুন। দুঃসময়ে সবার দায়িত্বশীল আচরণে সবার প্রতি সবার সম্পর্কের গভীরতা বাড়বে।

দায়িত্ব ভাগ করে নিন
পরিবারের দায়িত্ব কারও একার ঘাড়ে ফেলবেন না। পরিবারের সব কাজই ভাগ করে নিন। একটি পরিবারে অনেক কাজ থাকে। কাজগুলো পরিবারের সবার সাথে ভাগ করে নিলে, কেউ একা ক্লান্ত হয়ে পড়বেন না এবং সবার মধ্যে কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে। সন্তান আত্মনির্ভরশীল হবে। সবাই সবার সময়টুকু উপভোগ করতে পারবেন।

এসএকেওয়াই/এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।