বিয়েতে ধুতি নিয়ে বিড়ম্বনা

সাহিত্য ডেস্ক
সাহিত্য ডেস্ক সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৩৩ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২৩

মোহাম্মদ নুর হোসেন

শ্রীপর্ণার বিয়ে ঠিক হয়েছিল ৩ বৈশাখ ১৪২৫। বহুদিনের বন্ধু অপূর্বর সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছে শ্রীপর্ণা। কলেজের বন্ধু, তাই বিয়ের কেনাকাটা থেকে নেমন্তন্ন সবই তারা একসঙ্গে করেছে। বিয়ের দিনের নকশাকাটা ধুতিটাও শ্রীপর্ণার পছন্দেই কিনেছে অপূর্ব।

৩ বৈশাখ অপূর্বর বাড়ির সামনে বরের গাড়ি সেজেগুজে হাজির। শ্রীপর্ণার পিসতুতো দাদা এসেছেন বরকে নিতে। কিন্তু বরের ঘরের দরজা বন্ধ। প্রচুর ডাকাডাকি, ধাক্কাধাক্কির পর অপূর্ব বেরিয়ে এলো পরনে ট্র্যাক প্যান্ট, হাতে নকশাকাটা ধুতি নিয়ে। ডিজাইনার ধুতির নাকি মোক্ষম অংশে কাটা কাজের নকশা! কোঁচানো ধুতিটি কেনার সময় অনভিজ্ঞ বর-বধূ কেউই দেখে নেয়নি। বাড়িতে তো আর নতুন ধুতি নেই! এদিকে গোধূলি লগ্নে বিয়ে। অপূর্বর মায়ের মাথায় হাত।

এমন সময় মুশকিল আসানের ভূমিকায় অবতীর্ণ অপূর্বর বাবা। বললেন, দারুণ স্টাইল করে ধুতি পরিয়ে দেবেন, কোনো কাটা কাজ চোখেই পড়বে না। কাটা কাজের নকশা ঢাকতে গিয়ে ধুতি খানিক খাটো হলো। আর কী করা যাবে? ওটাকেই স্টাইল বলে মানতে হবে।

কোনোক্রমে বর হাজির হলেন বিয়ে বাড়িতে। শ্রীপর্ণার মা-বাবাও হাফ ছেড়ে বাঁচলেন যেন। বরণ, আশীর্বাদের পর তড়িঘড়ি বিবাহ মণ্ডপে নিয়ে যাওয়া হলো অপূর্বকে। দাদা-কাকাদের কাঁধে চড়ে শ্রীপর্ণাও হাজির। শুরু হলো সপ্তপদী। সাত পাক ঘুরে কনে যখন বরের সামনে এসে মালা বদলের জন্য দাঁড়াল; ততক্ষণে ধুতি ক্রাইসিস অনেকটাই কেটে গেছে। হালকা মেজাজে সবাই হাসি-ঠাট্টা জুড়ে দিয়েছেন বর-বধূর সঙ্গে।

কিন্তু ও মা! মালা বদল করতে গিয়ে যেই না হাত তুলেছে অপূর্ব, অমনি খসখস শব্দ করে ধুতিটি গেল খুলে! ভরা মণ্ডপে হাসির রোল। কোনোক্রমে শ্রীপর্ণাদের পুরোহিতমশাই অপূর্বকে টেনে নিয়ে ভেতরে গিয়ে নিজের ব্যাগ থেকে একটি ধুতি বের করে পরিয়ে দিলেন। কাজ করা তসরের পাঞ্জাবির সঙ্গে মলিন ইঞ্চিপেড়ে ধুতি পরেই বিয়ে হলো অপূর্ব-শ্রীপর্ণার।

শ্রীপর্ণার বিয়ের গল্প বলতে গিয়ে হেসেই অস্থির পুরোহিত অচিন্ত্য ভট্টাচার্য। দক্ষিণ কলকাতায় একটি কালীবাড়ির পুরোহিত তিনি। বিয়ের অনুষ্ঠানেও পৌরোহিত্য করেন। বললেন, বিবাহবাসরে হাসির ঘটনা এমন অনেক সামলেছেন। তবে বরের ধুতি খুলে যাওয়ার মতো কাণ্ড ওই একবারই।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।