দুই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম অনুসন্ধান শুরু দুদকের

প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজসহ সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এছাড়া নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেলে দুদকের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক এসব অভিযোগ অনুসন্ধান করছে।
আক্তার হোসেন বলেন, শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে প্রতিষ্ঠানের ফান্ডের ৩৪৩ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার ৪৯৯ টাকা শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ১০২ কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। এসব আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আমলে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।
একই দিনে নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। দুদক জানায়, তিনি ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম রোধের বিষয়ে দুদক বিশেষ কোনো ব্যবস্থা বা টাস্ক ফোর্স গঠন করছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে দুদক মহাপরিচালক বলেন, শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক এসব কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। বিশেষ ধরনের কোনো কিছু করেনি। যদি এমন আরও অভিযগো থাকে সেসব খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজসহ সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদকের সিদ্ধান্ত বিষয়ক সংবাদের প্রদিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. পাড় মশিয়ূর রহমান জানান, অর্থ আত্মসাতের মামলায় অভিযুক্ত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব শাখার ৪ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বর্তমানে জেলহাজতে। ওয়ারেন্টভুক্ত ৩ আসামি পলাতক এবং হিসাব বিভাগের আরও ৩ জনকে অতি সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। লক্ষণীয়, অভিযুক্ত আসামি ও চাকুরিচ্যুত সবাই হিসাব শাখার কর্মকর্তা।
বিবৃতিতে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের ধারণা, জেলহাজতে থাকা আসামি, ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি এবং চাকুরিচ্যুত কর্মকর্তাদের সংঘবদ্ধ গ্রুপ নিজেদের রক্ষা করতে ও প্রতিশোধ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের লেনদেন প্রতি বছর সরকার মনোনীত অডিট ফার্ম দ্বারা নিরীক্ষা করা হয়ে থাকে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়মিত সরকারি রাজস্ব প্রদান করে থাকে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এসএম/ইএ/এমএস