দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক : আসক


প্রকাশিত: ১২:২৩ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪

বাংলাদেশে ২০১৪ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছে  মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ২০১৪ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে এ  চিত্র তুলে ধরেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল।
 
তিনি বলেন, ২০১৪ সালেও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আগের বছরের তুলনায় বেড়ে গেছে। ২০১৩ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে ৭২ জন। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা বেড়ে ১২৮-এ দাঁড়িয়েছে। ২০১৪ সালে গুম ও গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছে ৮৮ জন। এর মধ্যে ১২ জন মুক্তি পেয়েছে। ২৩ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। দুজন কারাগারে এবং বাকিদের কোনো খোঁজ মেলেনি। ২০১৪ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতনে মারা গেছেন ১৩ জন। গ্রেপ্তারের আগে মারা গেছে দুজন।
 
৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৬৬৪টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছে ১৪৭ জন। আহত ৮ হাজার ৩৭৩ জন। বছরটিতে মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় বাধা পাওয়ার অভিযোগ এসেছে। এ সময় দুজন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২৩৯ জন।
 
এদিকে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির  ক্রম অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশিষ্ট রাজনৈতিক ভাষ্যকার ফরহাদ মজহার বলেন, জনগণের নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য এমন একটি  গণতান্দ্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি অশা করা যায় না। এ জন্য আন্দোলনের বিকল্প কিছু নেই।
 
তিনি মনে করেন, এ ব্যাপারে মানবাধিকার সংগঠন ও সচেতন নাগরিকদেরকে  বিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সাথে একটা  ইস্যুভিত্তিক ঐক্য গড়ে তোলা দরকার।
 
আইন ও শালিস কেন্দ্রের প্রতিবেদনে আরো জানা গেছে, ২০১৪ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৭৬১টি বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয়েছে। ১৯৩টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ২৪৭টি মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের  সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত বলেন, দেশ থেকে সংখ্যালঘুদের বিতাড়নের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এসব হামলা চালান হচ্ছে। ফলে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী নিরাপত্তাহীনতার মাঝে বাস করছে। সংখালঘুদের  রক্ষার  জন্য বিশেষ আইন প্রণয়নেরও দাবি জানান রানা দাস গুপ্ত। ২০১৪ সালে সীমান্তহত্যা, নির্যাতনসহ ২৭৩টি ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিতে ১৬ জন ও নির্যাতনে ১৬ জন নিহত হয়। বছরটিতে নারী নির্যাতন আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ৭০৭ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২০১৪ সালে অভিবাসী শ্রমিক ও মানব পাচারও বেড়েছে।
 
মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সহিংস রাজনীতি পরিহারের আহ্বান জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।