গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু
কেয়ার মরদেহ নিয়ে থানার সামনে স্বজনরা, করবেন বিক্ষোভ
রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় ফাহমিদা তাহসিন কেয়া (২৫) নামে এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যুর পরপরই তার স্বামী সিফাত আলী পালিয়ে যায়। সেই কেয়ার মরদেহ নিয়ে আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) মিরপুর মডেল থানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করবে কেয়ার পরিবার ও স্বজনরা। এ ঘটনায় বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে সিফাত আলীসহ (৩০) নয়জনের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
মরদেহ নিয়ে থানার সামনে আজ বিক্ষোভ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেয়ার ফুপা শামসুদ্দোহা খান। তিনি বলেন, ‘আমাদের মেয়েটাকে ওরা মেরে ফেলেছে। হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশের দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। এছাড়া কেয়ার চারটা সন্তান আছে। তার মৃত্যুর পরে সেই চার সন্তানকে জিম্মি করেছে কেয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বাচ্চাগুলোকে ওর ফুপু আটকে রেখেছে। কারো সঙ্গে দেখা, সাক্ষাৎ করতে দিচ্ছে না। আমরা এ ব্যাপারেও পুলিশের কাছে সহায়তা চেয়ে কোনো ধরনের সহায়তা পাইনি। তাই কেয়ার মরদেহ নিয়ে এখন আমরা থানায় যাচ্ছি। সেখানে বিক্ষোভ ও সংবাদ সম্মেলন করবো।’
পুলিশের বিরুদ্ধে কেয়ার পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সাজ্জাদ রোমান বলেন, বাচ্চার ব্যাপারে যে অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে সেটা আসলে আমাদের বেশি কিছু করার নেই। কারো বাচ্চাকে আমরা কী জোর করে কারো থেকে এনে দিতে পারি? কেয়ার মরদেহ নিয়ে তার পরিবার থানায় এসেছে। এদিকে কেয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও থানায় আসছে। তারা দুপক্ষ একসঙ্গে বসলে বিষয়টা সমাধান হবে।’

কেয়ার মৃত্যুর ঘটনায় মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি সাজ্জাদ রোমান বলেন, নিহত কেয়ার মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এজাহারটি হত্যা মামলা হিসেবে রুজু হয়েছে। মামলায় কেয়ার স্বামী সিফাত ও তাদের গাড়িচালকসহ মোট নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
- আরও পড়ুন
- গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, পলাতক স্বামীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- ‘আপনাদের মেয়ে আর নেই’, মধ্যরাতে শাশুড়িকে ফোনে জানিয়ে উধাও জামাই
নিহত কেয়ার পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে কেয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার পর কৌশলে ফোনকল করে স্বজনদের জানিয়ে পালিয়ে যান সিফাত আলী।
নিহত নারীর ফুফু সৈয়দা ফাতেমা জাহান কলি জানান, বুধবার দিনগত রাত ২টার দিকে সিফাত তার শাশুড়ি নাজমা বেগমকে ফোন করে জানান- কেয়া খুবই অসুস্থ। আপনারা বাসায় আসেন। কী হয়েছে জানতে চাইলে সিফাত একপর্যায়ে স্বীকার করেন যে ‘কেয়া আর বেঁচে নেই’।
এরপর নাজমা বেগম স্বামীসহ দ্রুত ওই বাসায় পৌঁছান। তারা সেখানে গিয়ে দেখেন সিফাত কেয়াকে নিয়ে পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে যাচ্ছেন। হাসপাতালে পৌঁছার পর চিকিৎসকরা কেয়াকে মৃত ঘোষণা করলে সিফাত সেখান থেকে উধাও হয়ে যান। পরে নাজমা বেগম ও তার স্বামী বাসায় ফিরে দেখেন, সিফাত বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন।
টিটি/এমএএইচ/এএসএম