বিদেশি চকলেটের আড়ালে ডাকযোগে আসতো ভয়ংকর মাদক এমডিএমএ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০৬ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজধানীর বিভিন্ন ডিজে পার্টিতে ব্যবহৃত হয় ‘খ’ শ্রেণির মাদক এমডিএমএ। বিভিন্ন অভিজাত শ্রেণির যুবক-যুবতীদের কাছেও সরবরাহ করা হতো এই ভয়ংকর মাদক। যা বিদেশি চকলেটের আড়ালে ডাকযোগে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে আসতো বলে জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।

এই মাদক সরবরাহকারী চক্রের মূলহোতা ও ডিজে পার্টির আয়োজকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তারা হলেন- মো. জুবায়ের (২৮), জি এম প্রথিত সামস (২৫), আসিফ মাহবুব চৌধুরী (২৭), সৈয়দ শাইয়ান আহমেদ (২৪) ও অপূর্ব রায় (২৫)। তাদের কাছ থেকে এমডিএমএ ট্যাবলেট ৩১৭ পিস, কুশ ১ কেজি ৬৭৬ গ্রাম, গাঁজা ২৫০ গ্রাম ও ৫টি কাচের বোতলে ৫০ মিলিলিটার কেটামিন জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৬টি মোবাইল ফোন, ১টি ল্যাপটপ এবং নগদ ৭ লাখ ১১ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. হাসান মারুফ।

মো. হাসান মারুফ বলেন, গত ১৪ সেপ্টেম্বর পল্টন মডেল থানাধীন পুরাতন ডাক ভবনের বৈদেশিক ডাক শাখা থেকে যুক্তরাজ্য থেকে আগত এয়ার পার্সেল তল্লাশি করে লালচে বর্ণের এমডিএমএ ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। তারপর জব্দকৃত কাগজপত্র পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পার্সেলটির প্রাপক, মাদকচক্রের অন্যতম হোতা মো. জুবায়েরের অবস্থান শনাক্ত করে ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

বিদেশি চকলেটের আড়ালে ডাকযোগে আসতো ভয়ংকর মাদক এমডিএমএ

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জুবায়ের জানান- এই পার্সেলটি যুক্তরাজ্য থেকে তার পূর্বপরিচিত অরণ্য ডাকযোগে অরণ্যের বন্ধু অপূর্ব রায়ের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে পাঠিয়েছেন, যা তাকে রিসিভ করে তার আরেক বন্ধু জি এম প্রথিত সামসের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এর বিনিময়ে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেবে বলে জানান। কাজটি করার জন্য অরণ্যের কথায় প্রথিত তাকে বিকাশের মাধ্যমে তিনবারে ১৫-১৬ হাজার টাকা অগ্রিম দেন।

ডিজি মো. হাসান মারুফ আরও বলেন, জুবায়েরের বর্ণনামতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এই আধুনিক মাদক চোরাকারবারি চক্রের অন্যতম হোতা জি এম প্রথিত সামসের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার কাছ থেকে এমডিএমএ ট্যাবলেট, গাঁজা ও কেটামিন উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, জুবায়ের এবং জি এম প্রথিত সামসকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে আসিফ মাহবুব চৌধুরীর বাসা ঘেরাও করে তাকে হাতেনাতে এমডিএমএ, গাঁজা, কুশ ও নগদ টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়। আসামি জুবায়েরের দেওয়া তথ্যমতে অপূর্ব রায়কে গাঁজাসহ গ্রেফতার করা হয় এবং প্রয়োজনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণাদি জব্দ করা হয়। অপূর্বের দেওয়া তথ্যমতে সৈয়দ শাইয়ান আহমেদকে গাঁজা ও এমডিএমএ চালানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণাদি জব্দ করা হয়।

ডিজি আরও বলেন, আসামিদের মোবাইল ফোন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তারা হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এবং অন্যান্য এনক্রিপ্টেড অ্যাপ ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল।

কেআর/বিএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।