রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দূরত্ব নয়: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
একটি রাজনৈতিক দলের বিষয়ে যদি আরেকটি দলের মতপার্থক্য থাকে সেটা দূরত্ব না বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রোববার (১৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
এনসিপির সঙ্গে সরকারে দূরত্ব বাড়ছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, একটা রাজনৈতিক বিষয়ে যদি একটা দলের মত পার্থক্য থাকে সেটা দূরত্ব না। এর আগে তো অনেক বড় বড় দল তাদের মতামত দিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই একমত হয়নি। যারা স্বাক্ষর করেছেন তারা নোট দিয়েছেন। এগুলোতো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। মতানৈক্য থাকতেই পারে।
জুলাই সনদ নিয়ে এতদিন বিএনপি ভিন্ন কথা বলেছে এখন এনসিপি বার বার জুলাই সনদের কথা বলেছে, তাহলে সাধারণ জনগণের কাছে কি বার্তা যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, সাধারণ জনগণের সঙ্গে তো এনসিপি নিজের মতো করে কথা বলেছে। তারা একটা রাজনৈতিক দল নিজেদের মতো করে সাধারণ জনগণকে বার্তাটা দিচ্ছে। তারা নিশ্চয় তাদের পজিশন পরিষ্কার করবে। এখানে সরকারের তো কিছু বলার নেই। এনসিপি সাধারণ জনগণকে বুঝাচ্ছে, যে বাস্তবায়নের রূপরেখাটাও সর্বসম্মতিক্রমে এই দলিলে আসুক।
আইনি ভিত্তিতে জুলাই সনদ চাচ্ছে এটা নিয়ে কি ঐকমত্য হচ্ছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কংক্রিট আইনি রূপরেখা এটা নিয়ে যখন ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে রিপোর্ট দেবে, তখন সরকার একটা পজিশনে যাবে। এটা আইন হবে না, তবে এর যাতে একটি ভিত্তি দেওয়া যায়, তার একটি রূপরেখা করা যায়।
কথা মেনে নিলে কি সনদে স্বাক্ষর করবে- এ বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, তারা ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে কথা বলবে। ঐকমত্য কমিশন ও তারা তাদের মতো করে প্রস্তাবনা নিয়ে কথা বলবেন, তারপর তারা স্বাক্ষর করবেন। যে কোনো কিছুতে সব পক্ষকে একটা সমঝোতায় আসতে হয়। তবে আমরা আশাবাদী যে ভালো কিছু হবে।
এনসিপি যেটা চাচ্ছে সেটার যৌক্তিকতা কি- জানতে চাইলে তিনি বলেন, যৌক্তিকতা নিয়ে আমি বলবো না। যখন রাজনৈতিক দল কোনো একটা বিষয়ে একমত হয়, সেটা আমি সঠিক বা বেঠিক কেমন করে বলবো। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সব রাজনৈতিক দল যদি একমত পোষণ করে তাহলে আমরা সেটা সঠিক ধরে নেবো।
সরকারের পরামর্শে এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করেনি- এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এটা ভিত্তিহীন কথা। বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র তথ্য বলে একটা তত্ত্ব আছে। সরকার প্রধান যেখানে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে দাঁড়িয়ে জুলাই সনদ স্বাক্ষর করেছেন। সেখানে এমন কথার কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না, তো সে কথার কোনো ভিত্তি নেই। সন্দেহ সৃষ্টির হওয়ার জন্য কিছু কথা বলে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গ: বিমানবন্দরে আগুন
একটার পর একটা দুর্ঘটনা ঘটছে, এটা কি নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করবে, গতকালও বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ড ঘটল। এটাকে আপনারা কীভাবে দেখছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে। সেই উদ্দেশ্য সামনে রেখেই আমরা কাজ করছি। নির্বাচন কমিশনকে সেই বার্তাটাই দেওয়া হচ্ছে, সব রাজনৈতিক দল ফেব্রুয়ারিতে যাতে নির্বাচন হয় সে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
তিনি বলেন, এখন এখানে একটার পর একটা অগ্নিকাণ্ড ঘটছে এবং সেটা বড় মাপের ঘটছে। সরকার প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত করবে। এর আগে সচিবালয়েও অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সেটার তদন্ত হয়েছে, আমরা কিন্তু স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তদন্ত করেছি। এখন এই অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত হবে। সেই তদন্তের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে পরের ঘটনা বলতে পারবো।
পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, ১ নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন পর্যটকরা। তবে সেখানে পর্যটকরা রাত্রিযাপন করতে পারবেন কি না সেই বিষয় পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
আরএমএম/এমআইএইচএস/জেআইএম