মেজাজ ভালো নেই ‘ডেইজির’
শুক্রবার ছুটির দিন। স্বাভাবিকভাবেই সেদিন বিকেলবেলা অনেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে যান রাজধানীর মিরপুরের চিড়িয়াখানায়। তবে গত শুক্রবার ঘটে ব্যতিক্রমী ঘটনা। হঠাৎই খাঁচা থেকে বের হয়ে যায় সিংহী ‘ডেইজি’। দ্রুত চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় উদ্ধার করা হয় সিংহীটিকে। এখন কেমন আছে ডেইজি এমন প্রশ্নে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেইজির মেজাজ ভালো নেই।
কী ঘটেছিল শুক্রবার
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার ঘটনা। চিড়িয়াখানার লায়ন মাঠ এলাকার একটি খাঁচা থেকে সিংহী ডেইজি বের হয়ে যায়। তবে খাঁচার সামনে থাকা উঁচু বেষ্টনীর কারণে লোকালয়ে যেতে পারেনি।
চিড়িয়াখানার এক কর্মকর্তা পরে জাগো নিউজকে বলেন, ‘চিড়িয়াখানার লায়ন মাঠ এলাকার খাঁচা থেকে সিংহীটি বেরিয়ে যায়। হয়তো খাঁচার কেচি গেট বা তালা খোলা ছিল। কিন্তু সিংহীটি লোকালয়ে আসেনি। যে জায়গায় সিংহীটি ছিল, সেখানে দর্শনার্থীদের কেউ প্রবেশ করে না।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় সিংহীটি অচেতন করা হয়।
আরও পড়ুন:
চিড়িয়াখানায় খাঁচা থেকে বের হয়ে গেছে সিংহী
চিড়িয়াখানা বন্ধ হোক: আরশ খান
খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী নিয়ে মানবিক আহ্বান
সে সময় জাতীয় চিড়িয়াখানার উপ-পরিচালক মানছুরা হাছিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘চিড়িয়াখানায় যতগুলো মাংসাশী প্রাণী রয়েছে সেগুলোর প্রতিটির ক্ষেত্রে দুটি করে খাঁচা থাকে। সিংহের ক্ষেত্রেও দুটি খাঁচা রয়েছে। এই সিংহীটি প্রথম খাঁচা থেকে বের হয়ে দ্বিতীয় খাঁচার ভেতরে অবস্থান করছিল।’
কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, যে সিংহীটি খাঁচা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল সেটির নাম ‘ডেইজি’। পরে ‘ট্রাঙ্কুলাইজারগান’ দিয়ে ইনজেকশন পুশ করে সিংহীটি অচেতন করা হয়। এরপর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে সেটি আবার খাঁচায় নেওয়া হয়।
কেমন আছে ডেইজি?
খাঁচা থেকে বের হওয়ার পর আবারও ডেইজিকে উদ্ধার করে খাঁচায় রাখা হয়েছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা দেখে অনেকেই চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনার নেতিবাচক দিক তুলে ধরছেন।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় চিড়িয়াখানায় মোট ৫টি সিংহ ও সিংহী রয়েছে। যে খাঁচা থেকে ডেইজি বের হয়, সেখানে আরেকটি সিংহী আছে, সেটির নাম ‘মুক্তা’।
ডেইজির বয়স ৫ বছর। ডেইজির জন্য সপ্তাহে ৫ দিন ৭ কেজি করে গরুর মাংস বরাদ্দ থাকে। একদিন দেওয়া হয় জীবন্ত মুরগি। ওজন ঠিক রাখার জন্য একদিন উপোস রাখতে হয় ডেইজিকে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, এমনিতে অন্য দিনের মতোই ডেইজি খাওয়া-দাওয়া করছে। তবে পায়চারী করছে ঘনঘন।
চিড়িয়াখানার হাসপাতালের সায়েন্টিফিক অফিসার, মাংসাশী প্রাণী শাখার প্রধান এবং নিরাপত্তা শাখার প্রধান চিকিৎসক মো. ওয়ালিউর রহমান বলেন, ডেইজি অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে কিছুটা ভয় পাচ্ছে বলে মনে হয়।
এদিকে, সিংহী ডেইজি কীভাবে খাঁচা থেকে বের হলো, তা তদন্তে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমানের নেতৃত্বে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনা নিয়ে দর্শনার্থীদের অনেকে অভিযোগ করে বলেন, চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদাসীন কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। পশুদের যত্নের বিষয়টি তো আছেই।
এসএনআর/এমএমএআর/এমএস