বেনজীরের ১৩২৭ টি-শার্ট, ৫৮৩ শাড়িসহ যেসব পণ্য জমা হলো ত্রাণ তহবিলে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:০১ এএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিপুল পরিমাণ মালামাল সরকারি ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করা হয়েছে

সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন গুলশানের বিলাসবহুল চারটি ফ্ল্যাট থেকে জব্দকৃত বিপুল পরিমাণ মালামাল সরকারি ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনায় এসব মালামাল গত ১৪ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ভান্ডারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তরের জন্য চিঠি পাঠায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত (আদেশ নং-১৮) মোতাবেক দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক বাজেয়াপ্তকৃত এসব মালামাল নিলামের পরিবর্তে জনস্বার্থে ত্রাণ তহবিলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুদক জানায়, আবাসিক এলাকায় প্রকাশ্য নিলামের নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং বিপুল পরিমাণ কাপড় ও তৈজসপত্র নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনায় এই আবেদন করা হয়েছিল, যা আদালত মঞ্জুর করেন।

যা পাওয়া গেল বেনজীরের চার ফ্ল্যাটে

গুলশানের ‘র‍্যাংকন আইকন টাওয়ার’-এর ১২/এ, ১২/বি, ১৩/এ এবং ১৩/বি ফ্ল্যাটে পাওয়া মালামালগুলোর তালিকা দীর্ঘ ও বৈচিত্র্যময়।

তালিকার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে পোশাক। চারটি ফ্ল্যাটের বিভিন্ন কক্ষ থেকে শুধু শাড়ি জব্দ করা হয়েছে ৫৮৩টি। এছাড়া মিলেছে বিপুল সংখ্যক টপস, থ্রি পিস ও লেহেঙ্গা।

সাবেক আইজিপির চার ফ্ল্যাটের বিভিন্ন কক্ষ থেকে ৫২টি, ৫টি, ৩২টি ও ৩০টি- মোট ১১৯টি শার্ট জব্দ করা হয়েছে, যা প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

বিভিন্ন কক্ষে প্যান্ট পাওয়া গেছে ১২৮টি ও লেডিস প্যান্ট পাওয়া গেছে ৩৩৫টি।

এছাড়াও, বড় গেঞ্জি, ছোট গেঞ্জি ও টি-শার্ট পাওয়া গেছে ১৩২৭টি। স্যান্ডেল, কেডস ও জুতা পাওয়া গেছে ১৭৯টি।

জব্দকৃত মালামালের মধ্যে পাঞ্জাবি ছিল ১১৮টি।

বিলাসবহুল গৃহস্থালি সামগ্রী: রান্নাঘর ও স্টোর রুমে পাওয়া গেছে দামি ব্র্যান্ডের ইলেকট্রনিক্স পণ্য। এর মধ্যে রয়েছে বার্নার, ওভেন, এয়ার ফ্রায়ার, কর্ডলেস টেলিফোন এবং ভ্যাকুয়াম ক্লিনার।

ধর্মীয় ও শৌখিন সামগ্রী: ১৩/এ ফ্ল্যাটের নামাজের ঘর থেকে ৩২টি আতর বা পারফিউম, ১১টি জায়নামাজ ও ৪৮টি তসবিহ জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের লোগো সম্বলিত মগ, ট্রাভেল ট্রলি এবং শোপিসও তালিকার অন্তর্ভুক্ত।

হস্তান্তর প্রক্রিয়া

দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হকের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের কমিটি এসব মালামাল গ্রহণ ও হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, নিলামযোগ্য মালামালের কিছু নমুনা রেখে বাকি সব পচনশীল দ্রব্য, ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত কাপড় এবং তৈজসপত্র প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ভান্ডারে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অভিযুক্ত সাবেক এই কর্মকর্তার অবৈধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ সরাসরি জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহৃত হতে যাচ্ছে।

জব্দ মালামালের তালিকা দেখতে এখানে ক্লিক করুন

এমডিএএ/এএমএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।