রাজধানীতে তরুণীর ৭ টুকরা লাশ উদ্ধার
রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় অজ্ঞাত এক তরুণীকে হত্যা করে লাশ ৭ টুকরা করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে লাশের সাতটি টুকরা উদ্ধার করা হয়েছে ৩টি বাড়ির ছাদ ও একটি খালি প্লট থেকে। তরুণীর মুখমণ্ডল পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তার বয়স হবে আনুমানিক ২০ থেকে ২২ বছর। নৃশংস এই ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। ফকিরাপুলের মতো জনাকীর্ণ স্থানে এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের পর লাশ টুকরা টুকরা করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
মতিঝিল থানার এসআই মফিজুর রহমান জানান, লাশের মোট সাতটি টুকরা পাওয়া গেছে। ফকিরাপুল পানির ট্যাংকির পূর্ব দিকে হোটেল উপবনের পার্শ্ববর্তী ১৯৩/১, ফকিরাপুলের রোকেয়া আহসান মঞ্জিলের ছাদে (৫ তলা বাড়ি) পাওয়া গেছে তরুণীর মাথা, পাশের একটি টিনশেড বাসার (ওয়াসার ক্যান্টিন) ছাদ থেকে শরীর, পাশের আরেকটি বাসার ছাদ থেকে এক হাত ও এক পা এবং পাশের একটি ফাঁকা প্লট থেকে আরেকটি হাত ও পা উদ্ধার করা হয়। তরুণীর মুখ পুড়িয়ে দেয়ায় তার লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয়দের দেয়া খবরের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকালের দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে লাশের বিচ্ছন্ন টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। অজ্ঞাত ওই তরুণীর নাম সুমী বলে পুলিশ প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে। তবে সেটা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মতিঝিল জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার সাইফুর রহমান জানান, প্রাথমিক তদন্তে এমন একটি তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু এখনও এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। নিশ্চিত হওয়ার জন্য পুলিশ কাজ করছে।
মতিঝিল জোনের ভারপ্রাপ্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন জানান, হত্যাকারীদের শনাক্ত ও হত্যার কারণ নির্ণয়ে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে সিআইডি ও গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। আশা করি, দ্রুতই সব জানা যাবে। ঘটনাস্থল থেকে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট আলামত সংগ্রহ করেছে।ক্রাইম সিন ইউনিটের একজন সদস্য জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে রোকেয়া আহসান মঞ্জিল ভবনের ছাদে বা ভেতরের কোনো এক কক্ষে তরুণীকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর যাতে খুনিরা ধরা না পড়ে সেজন্য তরুণীর চেহারা পুড়িয়ে দেয়া হয়। ক্রোধ কিংবা লাশ গুম করার জন্য লাশ কেটে খণ্ড বিখণ্ড করে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও রোকেয়া আহসান মঞ্জিলের সিঁড়িতে রক্ত পড়ে ছিল। সেগুলো ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করার চিহ্নও পেয়েছেন ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা। তারা ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ ছবি তুলেছেন এবং অন্যান্য আলামত উদ্ধার করেছেন। কি ধরনের অস্ত্র দিয়ে লাশ টুকরা করা হয়েছে সেই তথ্যও সংগ্রহ করেছে ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা।
ঘটনাস্থলে সিআইডি ও ডিবি কর্মকর্তারা জানান, যারাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথার খুনি। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তরুণীকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার আগে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হতে পারে বলেও ধারণা করছেন তারা। তরুণীর ঘনিষ্ঠ কেউ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে। তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কিনা ময়নাতদন্ত শেষে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। লাশের ৭টি টুকরা ৪টি ব্যাগে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যান মতিঝিল থানার এসআই আবদুল আউয়াল। তিনি জানান, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এসএইচএ/আরআইপি