ভূমিকম্প : ঢাকা পাবনা ও সাভারে নিহত ৩
শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এরপর আবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে দ্বিতীয় দফায় ভূকম্পন অনুভূত হয়।
সারাদেশে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যের খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের নতুন ভবন থেকে লাফ দিয়ে মারা গেছেন ১ জন, ভূমিকম্পের সময় হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে সাভারে এক পোশাক শ্রমিক মারা গেছেন এবং পাবনায় হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন আরো একজন।
ভূকম্পনের সময় পুকুরের পানিতে ঢেউ খেলে যায়। বাড়িঘর কেঁপে উঠে। এতে আতঙ্কিত হয়ে মানুষজন রাস্তায় বেরিয়ে আসে।
এদিকে সাভার প্রতিনিধি আল মামুন জানান, ভূমিকম্পের সময় ভবন ধসে পড়ার আতঙ্কে সাভারের আল-মুসলিম গ্রুপের এক পোষাক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত শতাধিক। শনিবার দুপুরের দিকে এ ঘটন ঘটেছে। আহত অবস্থায় তাদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভূকম্পের সময় কারখানার ভবন নড়ে চড়ে উঠলে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করে কারখানার সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা।
এসময় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সঙ্গে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে সাভার শিল্পাঞ্চলের উলাইল এলাকা।
শ্রমিকদের অভিযোগ, ভূমিকম্পের সময় শ্রমিকদের ভবন থেকে বেরিয়ে আসতে বাধা দেয় কারখানার নিরাপত্তারক্ষী ও কর্মকর্তারা। এর প্রতিবাদে কারখানার ভেতরে ভাঙচুর চালায় শ্রমিকরা। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানা থেকে বেরিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নিলে বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। কারখানার ভেতরে অনেক শ্রমিক আটকা পড়েছে-এমন দাবি করতে থাকে শ্রমিকরা।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে কারখানা ভবনটি পরিদর্শন করে সেখানে কোনো শ্রমিক আটকা নেই বলে মাইকে ঘোষণা দেয়। কিন্তু, শ্রমিকরা পুলিশের দাবি প্রত্যাখান করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।
এক পর্যায়ে পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ শুরু করলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন অলিগলিতে অবস্থান নিলে সেখানে গিয়েও হামলা চালায় পুলিশ। দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ।
প্রায় আধাঘণ্টা সংঘর্ষের পর রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো উলাইল শিল্পাঞ্চল। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে শ্রমিকরা পিছু হটলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ।
সাভার মডেল থানা পুলিশের সিনিয়র এএসপি রাসেল শেখ জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাড়াহুরো করে নামতে গিয়ে এক শ্রমিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এখন পর্যন্ত তার নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এআরএস/আরআইপি/ এমএএস